সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, গ্রুপ ও পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি সাম্প্রতিক। একজন ব্যক্তি প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে বৈধ উপায়ে অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যনেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরামর্শ দিচ্ছেন এবং শ্রমিকরা সবাই তার সঙ্গে সম্মতি জ্ঞাপন করছেন। এরকম কয়েকটি ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৯ জুলাই 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ( সাবেক ও বর্তমান ) 👈' নামের একটি গ্রুপে 'Fokrul Islam Joney' আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে বলা হয়, "যারা মাকে ভালোবাসে তারা দেশকেও ভালোবাসে মায়ের সাথে দুই দিন রাগ করে থাকা যায় মাকে ছুড়ে ফেলে দেওয়া যায় না এর হলো আমাদের দেশের সোনার সন্তান প্রকৃত দেশপ্রেমী রেমিট্যান্স যোদ্ধারা সেলারী পাওয়ার পরে দেশে টাকা পাঠাবে ব্যাংকের মাধ্যেমে।। দেশের প্রতি ভালোবাসা কতো❤❤ যে নিজ দেশকে ভালোবাসবে না, সে কারো রে ভালোবাসতে পারেনা।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, প্রবাসীদের বৈধ উপায়ে অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরামর্শমূলক ভাইরাল ভিডিওটি বিভ্রান্তিকরভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং এটি গত এপ্রিল মাসের ১৬ তারিখ থেকেই অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।
ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, একাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি বেতন হাতে পাওয়ার পর উদযাপন করছেন। পাশে থাকা একজন ব্যক্তি তাদেরকে এই বেতনের অংশ বৈধ উপায়ে অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠানোর পরামর্শ দিচ্ছেন এবং শ্রমিকরা তার কথায় সম্মতি জ্ঞাপন করছেন।
পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "আলহামদুলিল্লাহ জেদ্দা সাইডের বেতন দিলাম" শিরোনামে গত ১৬ এপ্রিল 'FIRST Class Group' পেজ থেকে ৭ মিনিটের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় (আর্কাইভ লিংক দেখুন এখানে)। যেই ভিডিওটির সঙ্গে ভাইরাল ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়। যদিও ভিডিওটিতে পরামর্শ দেওয়া ব্যক্তি এবং অন্যান্যদের পরিচয় খুঁজে পাওয়া যায়নি। ভিডিওটি দেখুন--
এবার সাম্প্রতিক দাবিতে ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং FIRST Class Group পেজ থেকে প্রচারিত পুরোনো ভিডিওর স্ক্রিনশটের (ডানে) মধ্যে সামঞ্জস্য দেখুন পাশাপাশি--
অর্থাৎ রেমিট্যান্স নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর পরামর্শমূলক ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং এটি পুরোনো।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদ স্বরূপ আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠানো বন্ধে প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। অনেক প্রবাসীও এই আহ্বানে সাড়া দেয়। এর প্রেক্ষিতে সরকার এবং সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা রেমিটেন্স ব্যাংকিং চ্যানেলে পাঠানোর জন্য নানান ধরনের প্রচারণা চালায়। ফলস্বরূপ পুরোনো এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক দাবিতে ছড়িয়ে পড়ে।
সুতরাং প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্স পাঠানো সম্পর্কিত পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।