সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একটি পেজ থেকে একটি সুড়ঙ্গের ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ইসরায়েলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে গাজায় হামাসের যোদ্ধারা এই সুড়ঙ্গটি তৈরি করেছেন। পোস্টটি দেখুন এখানে।
গত ৯ নভেম্বর 'Azad's Chemistry Point -ACP' নামের পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "ইজরাইলের অত্যাচার থেকে বাঁচতে হামাসের তৈরী সুড়ঙ্গ যারা এখনো দেখেননি তারা একবার দেখে নিন।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ভিডিওটি গাজায় হামাস যোদ্ধাদের তৈরি নয়। বরং এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর সদস্যদের জন্য তৈরি করা একটি ট্যানেল বা সুড়ঙ্গ।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ডেইলি মিররের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। In pictures: Winston Churchill's labyrinth of forgotten Second World War tunnels give rare glimpse of wartime life শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিও সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়, "ডোভারে জাতীয় ট্রাস্ট কেন্টে ফ্যান বে ডিপ শেল্টারের টানেল সংরক্ষণের দুই বছর পর জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করার জন্য প্রস্তুত করা হয়।" প্রতিবেদন অনুযায়ী, এটি ২০১৫ সালে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। স্ক্রিনশট দেখুন---
কি ওয়ার্ড সার্চ করে TIGHT SQUEEZE BUNKER. SECRET Army Battle WW2 Underground HQ. MAN vs HOLE শিরোনামে TheSecretVault নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যার সাথে আলোচ্য ভিডিওটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ডেসক্রিপশন থেকে পাওয়া ‘বিয়ন্ড দ্য পয়েন্ট’ নামের এক ওয়েবসাইটে প্রকাশিত REIGATE ARMY BATTLE HEADQUARTERS শিরোনামে এক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, "ভিডিওতে দেখানো বাংকারটি রেগেট আর্মির একটি বাংকার। যেটি ইংল্যান্ডের সারে কাউন্টির শহর রেগেটে অবস্থিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এটি নির্মাণ করা হয়।" ওই প্রতিবেদনে বাংকারটির কিছু ছবি প্রকাশ করা হয়। যেগুলোর সঙ্গে আলোচ্য ভিডিওটির সঙ্গে সামঞ্জস্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে Hidden UNDERGROUND WW2 Battle HQ Bunker শিরোনামে ExploringWithin ইউটিউব চ্যানেলে আরও একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। যার সাথে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওর সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
নিচে আলোচ্য ফেসবুক থেকে নেওয়া ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং ইউটিউবের ExploringWithin চ্যানেল থেকে নেওয়া ভিডিওর স্ক্রিনশট (ডানে) এর মধ্যে তুলনা দেখুন--
অর্থাৎ এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৈরি যুক্তরাজ্যের একটি সুড়ঙ্গের ভিডিও, গাজায় হামাসের তৈরি সুড়ঙ্গের ভিডিও নয়।
সুতরাং যুক্তরাজ্যে অবস্থিত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে তৈরি একটি সুড়ঙ্গের ভিডিওকে গাজায় হামাসের তৈরি সুড়ঙ্গ বলে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।