সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপ থেকে একটি ট্রেনে আগুন লাগার ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, আগুন লাগার এই ভিডিওটি সাম্প্রতিক অর্থাৎ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমলের। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৪ জানুয়ারি 'ঢাকা জেলা আওয়ামী যুবলীগ' নামের একটি একাউন্ট থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে উল্লেখ্য করা হয়, "ট্রেনে আগুন- আহা দেশের অবস্থা 😢 দেশের দায়িত্ব কার হাতে তুলে দিলেন.?” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ দাবি করা হচ্ছে, শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে ট্রেনে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে আলোচ্য ভিডিওটি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের আমলের বা সাম্প্রতিক নয় বরং এটি ২০২২ সালে মৌলভীবাজারে পারাবত এক্সপ্রেসে আগুন লাগার পুরোনো ভিডিও।
সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড সার্চ করে “মৌলভীবাজার শমসেরনগরে চলন্ত আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের বগিতে ভয়াবহ আগুন” শিরোনামে ‘ইউএনবি’র অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ১১ জুন প্রকাশিত ভিডিওটির সঙ্গে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত ভাইরাল ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটি দেখুন--
নিচে ফেসবুকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত ভাইরাল ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং ২০২২ সালে প্রকাশিত ইউএনবির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিওর স্ক্রিনশট (ডানে) পাশাপাশি দেখুন--
আলোচ্য সূত্র ধরে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে “মৌলভীবাজারে ট্রেনে আগুন, ঢাকা-সিলেট রেল যোগাযোগ বন্ধ” শিরোনামে ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির’ অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ১১ জুন প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মৌলভীবাজারের শমসেরনগর বিমানবন্দর এলাকায় সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত ট্রেনের বগিতে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে সিলেটের সঙ্গে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি সাম্প্রতিক বা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আমলের নয়। বরং ২০২২ সালে মৌলভীবাজারের শমসেরনগর বিমানবন্দর এলাকায় সিলেটগামী আন্তঃনগর পারাবত ট্রেনের বগিতে আগুন লাগার ভিডিও এটি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
সুতরাং ট্রেনে আগুন লাগার ২০২২ সালের ভিডিও বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।