সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে বিক্ষোভ আর ধ্বস্তাধস্তির একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে মোহাম্মদ রিজওয়ান নামে একজন মন্দিরে হামলাকারীকে পুলিশ কর্তৃক আদালতে নিয়ে যাওয়ার পথে হিন্দুরা তার ওপর আক্রমণ করেছে। পোস্টটিতে দাবিকৃত হামলার জন্য বাহবাও দেয়া হয়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১০ অক্টোবর "Shri Gobinda" নামের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "কিছুদিন আগে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের মন্দিরে হামলাকারী মহম্মদ রিজওয়ানকে ব্রিটিশ পুলিশ থানা থেকে কোর্টে নিয়ে যাচ্ছিল, আর সেই খবর ওখানকার হিন্দুদের কাছে পৌছে যায়...... ব্যস্......... কি হলো এর পরে......এবার আপনারাই দেখে নিন নিজ চোখে . . . . . . ভালো করে আপ্যায়ন করেছে প্রবাসী হিন্দুরা, যা দেখে ব্রিটিশ পুলিশও বিস্মিত হয়ে যায়।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় করা দাবিটি সঠিক নয়।
প্রথমত
বিভিন্ন ভাষায় একাধিক কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পরও সাম্প্রতিক সময়ে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে মন্দিরে হামলার জন্য 'মহম্মদ রিজওয়ান' নামে কোনো ব্যক্তিকে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার করার খবর কোনো সংবাদমাধ্যমেই প্রকাশিত হতে দেখা যায়নি।
দ্বিতীয়ত
ভিডিওটি থেকে কী ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করার পর, 'Viral Vital Videos' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। "Iran protesters clash Maida Vale London UK Iranian protests Muslim regime Police outnumbered" শিরোনামে ভিডিওটি গত ২৭ সেপ্টেম্বর ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়। ভিডিওটি এইজ রেস্ট্রিক্টেড। এখানে ক্লিক করে দেখুন। ভিডিওটি দেখুন--
সার্চ করার পর, একই বিক্ষোভের আরেকটি ভিডিও ব্রিটেন ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইলের ইউটিউব চ্যানেলে "Iran protests turn violet in London: Riot police deployed, following death of Mahsa Amini" শিরোনামে পোস্ট করতে দেখা যায়, যা গত ২৬ সেপ্টেম্বর পোস্ট করা হয়েছে। এই ভিডিওতে ফেসবুকে প্রচারিত আলোচ্য ভিডিওর অনেক দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। ভিডিওর বিবরণ থেকে জানা যায়, ইরানে পুলিশ হেফাজতে তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে লন্ডনের ইরানি দূতাবাসের সামনে প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে প্রতিপক্ষ ধর্মীয় মিছিলের এক সদস্যের প্রতি মারমুখী হয় কিছু বিক্ষোভকারী। ভিডিওটি দেখুন--
এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে ডেইলি মেইলের অনুরূপ বিবরণে সংবাদ প্রকাশিত হতে দেখা গেছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি রিজওয়ান নামে কোনো ব্যক্তিকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা মারপিট করার নয়।
সুতরাং লন্ডনে ইরানি দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রকাশ করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।