সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হয়েছে, যেখানে লেখা রয়েছে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলায় একটি ব্যক্তিগত গোডাউন থেকে ৬০০ বস্তা ওএমএসের (খোলাবাজারে বিক্রির জন্য) সরকারি চাল জব্দ করেছে পুলিশ। এ সময় চাল কালোবাজারির সঙ্গে জড়িত থাকায় অভিযোগে দুইজন যুবদল নেতাকে আটক করা হয়। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
৩১ জানুয়ারি ‘জিয়াউদ্দিন পাটোয়ারী’ নামক একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ফটোকার্ডটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, “কি একটা অবস্থা"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। বাগেরহাটের ফকিরহাটে ওএমএসের চাল জব্দ করার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুইজন যুবদল নেতা নয়। তাদের একজন মালিকের ছেলে এবং একজন ঐ দোকানের কর্মচারী। ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও স্থানীয় এক সাংবাদিক বুম বাংলাদেশকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রচারিত খবরে তাদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আলোচ্য ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যম ‘খবর প্রতিদিন’-এর অনলাইনে গত ২৩ জানুয়ারি “বাগেরহাটে ওএমএসের ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ, গ্রেপ্তার-২” শিরোনামে আলোচ্য ছবিটি সহ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।
এতে উল্লেখ করা হয়, বাগেরহাটের ফকিরহাট বাজারের একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ খোলা বাজারের বিক্রির (ওএমএস) ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করেছে। এসময় পুলিশ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত দুইজন হলো; ফকিরহাট বাজারের মেসার্স মজুমদার ভান্ডারের মালিক প্রফুল্ল মজুমদারের ছেলে আশাতীত মজুমদার (২১) ও কর্মচারি আব্দুর রসূল (৪৫)।
তবে প্রতিবেদনের কোথাও গ্রেপ্তারকৃত দুইজনকে যুবদল নেতা বলে উল্লেখ করা হয়নি কিংবা প্রতিবেদনে তাদের রাজনৈতিক কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী সার্চ করে বেসরকারি সম্প্রচার মাধ্যম 'সময় টেলিভিশন'-এর অনলাইন সংস্করণেও 'বাগেরহাটে ওএমএসের ৬০০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়।
সময় টেলিভিশন সহ অধিকাংশ মূলধারার গণমাধ্যমে এই সংবাদটি পাওয়া গেলেও কোনো গণমাধ্যমেই গ্রেপ্তারকৃত দুইজনের সাথে যুবদলের সম্পৃক্ততার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। 'সময় টেলিভিশন'-এর অনলাইন সংস্করণের প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
গণমাধ্যমের খবরে তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় না পাওয়ায়, আলোচ্য পোস্টের তথ্যের সত্যতা জানতে বাগেরহাটের ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আলমগীর কবীরের সাথে যোগযোগ করে বুম বাংলাদেশ। তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃত দু’জন কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নয়।
পাশাপাশি যোগাযোগ করা হলে দৈনিক কালবেলার ফকিরহাট উপজেলা প্রতিনিধি এস কে মনিরুজ্জামানও বুম বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, ফকিরহাটে ওএমএসের চাল জব্দ করার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দু’জন যুবদল নেতা নন। তাদের একজন মালিকের ছেলে এবং একজন ঐ দোকানের কর্মচারী।
অর্থাৎ বাগেরহাটের ফকিরহাটে ওএমএসের চাল জব্দ করার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত দুইজন যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত (নেতা) নন। আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়।
সুতরাং বাগেরহাটে একটি অভিযোগে গ্রেপ্তার দুইজন ব্যক্তি যুবদলের নেতা বলে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে তা সঠিক নয়।