সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে একটি মেয়ে শিশুর ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে, ভিডিওটিতে দেখা যায় শিশুটি তার ছোট আরেক শিশুকে বুকের দুধ পান করানোর ভান করে শান্ত করছে। দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পরে ধারণ করা। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি 'আব্দুল্লাহ আল নোমান' নামের একটি আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "তুরস্কের ভুমিকম্পে। বড় বোন হল মায়ের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ যে মায়ের পর মায়ের অভাব পূরণ করে।😓❤️ আজ তা আবারও প্রমাণ পেলো।😕😓" কেবল এই আইডি থেকেই ভিডিওটি ৫৫ মিলিয়নের অধিকবার দেখা হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় এবং তুরস্কের সাম্প্রতিক ভুমিকম্পের সাথেও সম্পৃক্ত নয়। বরং ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর একটি টিকটক একাউন্টে ভিডিও পোস্ট করা হয়েছিল।
ভিডিওটি থেকে কী-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করার পর, 'anelya.495' নামের একটি টিকটক একাউন্টে ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর পোস্ট করা হয়েছে। টিকটক একাউন্টিতে ভিডিওর হ্যাশট্যাগে রাশিয়ান ভাষা ব্যাবহার করা হয়েছে এবং ইউজার নেমে বেলারুশিয়ান ভাষায় লেখা আছে' ГуляАнэля' বা 'Angel's play'। গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, রাশিয়ান এবং বেলারুশিয়ান দুটোই বেলারুশে দাপ্তরিক ভাষা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যা থেকে ধারণা করা যায়, এই টিকটক একাউন্টটি বেলারুশ- রুশ অঞ্চল বা এই ভাষাভাষী কোনো ব্যক্তির দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। দেখুন--
টিকটিক একাউন্টটিতে অনুসন্ধান করে দেখা যায়, আইডিতে ভাইরাল ভিডিওতে দৃশ্যমান শিশুর পুরোনো বেশ কয়েকটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। শিশুটির এরকম ভিডিও পাওয়া গেছে যা ২০২১ সালে টিকটকের এই একাউন্টটি থেকে পোস্ট করা হয়েছিল। দেখুন--
অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই ভিডিওটি তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কোনো শিশুর নয়। বরং ভূমিকম্পের আগেই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল টিকটকে।
বুম বাংলাদেশ মন্তব্যের জন্য 'anelya.495' টিকটক আইডির ব্যবহারকারীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছে। মন্তব্য পাওয়া মাত্র প্রতিবেদনটি আপডেট করা হবে।
উল্লেখ্য গত ৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) তুরস্ক ও সিরিয়ায় শক্তিশালী ভুমিকম্পে মৃতের সংখ্যা সবশেষ খবর পর্যন্ত ২৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
সুতরাং ২০২২ সালে থেকে টিকটকে প্রচারিত হয়ে আসা এক শিশুর ভিডিওকে তুরস্কের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের সাথে জুড়ে ভিত্তিহীন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।