সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক একাউন্ট থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের ধান কাটার ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, তারা ছাত্রলীগের ধান কাটা কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২১ অক্টোবর "Rajeya Sultana Rani Rani" নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়, "চিনতে পারছেন,এরা কারা,বারোবাতারি এরা,এদের রুপ পাল্টাতে সময় লাগে না।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের ছবিটি এডিটেড। ২০১৯ সালের মে মাসে মুন্সিগঞ্জে ছাত্রলীগের আয়োজনে ধান কাটার একটি কর্মসূচীতে তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর একটি ছবি এডিট করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহবায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের চেহারা বসিয়ে আলোচ্য ছবিটি বানানো হয়েছে।
আলোচ্য ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে "মুন্সিগঞ্জে ‘দরিদ্র কাশেম চাচার’ এবার ধান কাটলেন শোভন-রাব্বানী" শিরোনামে ‘প্রবাসীর দিগন্ত’ নামের একটি অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ২০১৯ সালের ২৩ মে ওই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবিটির সঙ্গে ভাইরাল ছবিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলিতে দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দেন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। স্ক্রিনশট দেখুন--
নিচে ২০১৯ সালের শোভন-রাব্বানীর ধান কাটার অরিজিনাল ছবি (বামে) এবং হাসনাত-সারজিসের এডিটেড ছবি (ডানে) দুটির মধ্যে সামঞ্জস্য দেখুন পাশাপাশি--
পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "এবার রাব্বানীর সঙ্গে ধান কাটলেন শোভন" শিরোনামে ‘বাংলাদেশ জার্নাল’ এর অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি ২০১৯ সালের ২৩ মে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নিমতলীতে কৃষক আবুল কাশেমের ডাকে সাড়া দিয়ে তার ক্ষেতের ধান কাটতে যান ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা (শোভন-রাব্বানী) ও তাদের অনুসারীরা। ওই প্রতিবেদনে শোভন-রাব্বানীর ধান কাটার মুহুর্তের বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করা হয়। ছবিগুলো একই ইভেন্টের ভিন্ন দৃশ্যের। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর ধান কাটার মুহুর্তের ছবি এডিট করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের চেহারা বসিয়ে আলোচ্য ছবিটি বানানো হয়েছে।
সুতরাং ছাত্রলীগের সাবেক দুই নেতার ছবি এডিট করে হাসনাত-সারজিসের চেহারা বসিয়ে ভিন্ন দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।