সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি আগুনে পোড়া অবস্থার বাসা সহ জাতীয় ক্রিকেট দলের সদস্য লিটন দাসের ছবির কোলাজ পোস্ট করে বলা হচ্ছে; লিটন দাসের বাসায় আগুন দেওয়া হয়েছে। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ৬ আগস্ট 'Deba Nath' নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ছবি সহ তথ্যটি পোস্ট করা হয়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, "ইনি হলেন লিটন দাস,বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেন, ওনার বাড়ি বন্ধ করে গতকাল আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়ে, একদল শান্তিপ্রিয় মানুষদের দ্বারা, আগুন লাগানোর কারণ কি ছিল জানেন? কারণ উনি একজন হিন্দু"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। লিটন দাসের বাসায় আগুন দেওয়া হয়নি। আগুনে জ্বলন্ত বাসার ছবিটি লিটন দাসের বাসার নয় বরং এটি মাশরাফির বাসার আগুনের দৃশ্য।
বিষয়টি নিয়ে কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে 'দৈনিক ইত্তেফাক'-এর অনলাইন সংস্করণে গত ৬ আগস্ট "নড়াইলে মাশরাফির বাড়িতে আগুন" শিরোনামে প্রকাশিত আলোচ্য আগুনে পোড়া অবস্থার বাসার ছবিটি সহ একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় সংসদের হুইপ নড়াইল-২ সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার নড়াইলের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, কি-ওয়ার্ড সার্চ এর মাধ্যমে অনলাইন সংবাদমাধ্যম 'রাইজিং বিডি'-তে গত ৫ "নড়াইলে আগুনে পুড়লো মাশরাফির বাড়ি" শিরোনামেও আলোচ্য ছবিটি সহ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। এই প্রতিবেদনেও একই তথ্য উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া কি-ওয়ার্ড সার্চ করে মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে লিটন দাসের বাড়িতে আগুন দেওয়া সংক্রান্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ মাশরাফির বাসার আগুনের ছবি লিটন দাসের বাসার বলে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর, দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও দলটির নেতাকর্মীদের বাসায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে। তন্মধ্যে ক্রিকেটার থেকে সংসদ সদস্য বনে যাওয়া সাকিব আল হাসানের পার্টি অফিসেও আগুন দেওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যমে 'লিটন দাসের বাসায় আগুন দেওয়া হয়েছে' মর্মে যে তথ্য প্রচার করা হচ্ছে; তা বিভ্রান্তিকর।