সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের কয়েকটি একাউন্ট থেকে সিডনি অপেরা হাউসের একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম বৃহৎ শহর সিডনি অপেরা হাউসের তলদেশের অংশ। এররকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৪ অক্টোবর 'সাইন্স একাডেমী (পদার্থ বিজ্ঞান,রসায়ন,জীব বিজ্ঞান ও উচ্চতর গনিত) 📚🖋️' নামের একটি গ্রুপে ‘Rezaur Rashid’ নামের আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে বলা হয়, "সিডনি অপেরা হাউসের নিচে।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ছবিটি বাস্তবিক নয়। অর্থাৎ ছবিটি বাস্তব কোনো ভবনের দৃশ্য নয় বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে এটি তৈরি করা হয়েছে।
সিডনির অপেরা হাউস দাবিতে আলোচ্য ভবনটির ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভবনটির পাশে অর্থাৎ ওপরের অংশে পানি। আবার হাউসের তলদেশে দেখানো ভবনের অংশে পানি। এছাড়া, অপেরা হাউসের সঙ্গে নিচে বা তলদেশের বিল্ডিংয়ের যুক্ত হওয়ার বিষয়টি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, যা বাস্তবিক নয়। ছবিতে দেখুন--
পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড সার্চ করে “The Sydney Opera House: The monument that represents Australia” শিরোনামে ‘বিবিসি’র অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে সিডনির অপেরা হাউস সম্পর্কে বলা হয়, ২০ শতকে নির্মিত ভবনটি বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রতিবেদনটিতে ভবনের মূল নকশা সম্পর্কে বিস্তরিত উল্লেখ্য থাকলেও এর তলদেশের ভবন বা নকশা সম্পর্কে কোনো ধরণের তথ্য পাওয়া যায়নি।
আলোচ্য ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে দাবি অনুযায়ী ছবিগুলো বাস্তব হওয়ার বিষয়ে কিংবা ছবির বিষয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া আলোচ্য ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, এটি বাস্তব ছবির বৈশিষ্ট্যের সাথে সাংঘর্ষিক এবং এরমধ্যে এআই ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
পরবর্তীতে, এআই ছবি শনাক্তের টুল 'হাইভ' ব্যবহার করে ছবিগুলো যাচাই করা হয়। টুলটি ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া এআই ছবি শনাক্তের আরেক টুল 'huggingface' ব্যবহার করেও ছবিটি যাচাই করা হয়। এই টুলটিও ছবিটিকে সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবিটির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি সিডনির অপেরা হাউসের তলদেশের নয় বরং এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে বাস্তবিক ছবি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।