সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে একটি ব্রোঞ্জ মূর্তি ভাঙচুরের ভিডিও শেয়ার করা হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় মূর্তিটি টান মেরে ভাঙ্গছেন এক ব্যক্তি। তাকে কয়েকজন আটকানোর চেষ্টাও করছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৮ জুন 'Didarul Alam' নামের ফেসবুক আইডি থেকে থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখা হয়, "লাহোর দুর্গের রাণী জিন্দান প্রাসাদের বাইরে শিখ সম্প্রদায়ের শের-ই-পাঞ্জাব মহারাজা রঞ্জিত সিং-এর মূর্তি ভেঙ্গে দেয়ার পবিত্র কর্তব্য পালন করছেন উনারা"। ভিডিওটির ক্যাপশন ও প্রকাশের তারিখ দেখে এটিকে সাম্প্রতিক ঘটনা মনে করে পাঠকদের মন্তব্য করতে দেখা গেছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং এক বছর পুরোনো।
কি ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনে "Man arrested for vandalising Raja Ranjit Singh's statue at Lahore Fort" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০২১ সালে ১৭ আগস্ট প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে দ্য ডনের ইন্সটাগ্রামে আপলোড করা ভিডিওটিও যুক্ত করা হয়েছে। ভিডিওটি দেখুন--
একই খবর ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট প্রকাশ করা হয়েছে "Police arrest religious party activist for vandalising Ranjit Singh statue" শিরোনামে পাকিস্তানের আরেকটি সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনেও। এই প্রতিবেদনে লেখা হয়, তৎকালে শিখ সাম্রাজ্যের রাজা রঞ্জিৎ সিংয়ের ৯ ফুটের ব্রোঞ্জ মূর্তি ভাঙচুর করা হয়, যা লাহোর দুর্গে স্থাপিত ছিল। এই ঘটনায় তৎকালীন পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী নিন্দা এবং হামলাকারী গ্রেফতার হবার কথাও জানানো হয় প্রতিবেদনে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এই ঘটনার সর্বশেষ তথ্য জানতে সার্চ করার পর, দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনেই চলতি বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ১০ এপ্রিল "Maharaja Ranjit Singh's statue restored to golden shine" শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, মহারাজা রঞ্জিৎ সিংয়ের মূর্তিটি সংস্কার করা এবং পুনরায় লাহোর দুর্গে স্থাপনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় বরং এক বছর পুরোনো। পাশাপাশি এই ঘটনাটির প্রেক্ষিতে ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে। যেসব তথ্য ফেসবুক পোস্টগুলোতে নেই।
সুতরাং এক বছর পুরোনো পাকিস্তানের একটি ভিডিওকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে সাম্প্রতিক তথ্য সংযোজন ছাড়াই প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।