সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, লন্ডনে একটি মসজিদে আযান নিষিদ্ধ করার পর মসজিদ থেকে গায়েবি আযান আসতে শুরু হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৩০ ডিসেম্বর 'মার্জিত মন্তব্য' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "লন্ডনে একটি মসজিদে আযান নিষিদ্ধ করার পর মসজিদ থেকে গায়েবী আযান আসতে শুরু হয়েছে"। স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া চলতি বছরে সহ গত কয়েক বছর ধরেই ভিডিওটি একই তথ্যসহ বিভিন্ন ফেসবুক আইডি ও পেজ থেকে পোস্ট করা হয়েছে। এরকম একটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওর ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়।
ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স সার্চ করলে, ইউটিউবে 'Presheva Lee' নামের একটি চ্যানেলে "First Azan - Muslim call to prayer in Stockholm - Sweden" ক্যাপশনসহ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে দেখতে পাওয়া মসজিদটি হুবহু আলোচ্য ফেসবুক পোস্টের অনুরূপ। ২০১৩ সালের ১ মে পোস্ট করা ভিডিওটির বিবরণে লেখা হয়েছে, সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের একটি মসজিদের মিনার থেকে ঐতিহাসিক আজানের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
আরও নিশ্চিত হতে, গুগল স্ট্রিট ভিউ-এর সাহায্যে আলোচ্য ভিডিওতে দেখতে পাওয়া মসজিদের সাথে সুইডেনের স্টকহোমের ফিট্টাজা এলাকায় অবস্থিত মসজিদকে মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় ভিডিওটি ফিট্টাজা মসজিদেরই। তুলনা দেখুন--
পরে স্ট্রিমিং ওয়েবসাইট ডেইলিমোশনে হুবহু আলোচ্য ভিডিওর পুরোনো ভার্সন খুঁজে পাওয়া যায়। এখানেও ভিডিওটি সুইডেনের বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই সূত্রধরে সার্চ করার পর, The Local Sweden নামের একটি সুইডিশ সংবাদমাধ্যমে 'Historic prayer call heard at Stockholm mosque' শিরোনামে প্রকাশিত একটি খবর পাওয়া যায়, যা ২০১৩ সালের ২৬ এপ্রিল প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের একটি পৌর কর্তৃপক্ষ মসজিদের মিনার থেকে প্রথমবারের মত আজান দেয়ার অনুমতি দিলে ফিট্টাজা এলাকার ঐ মসজিদের মিনার থেকে জুমার নামাজের আজান দেয়া হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি লন্ডনের নয় কিংবা গায়েবি আজানেরও নয়। বরং ২০১৩ সালে সুইডেনের একটি মসজিদ থেকে জুমার আজান দেয়ার সময়ে ধারণ করা দৃশ্য এটি।
সুতরাং স্টকহোমের ফিট্টাজা এলাকায় অবস্থিত একটি মসজিদে আজান দেয়ার ভিডিওকে লন্ডনের মসজিদ থেকে গায়েবি আজান বলে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।