সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে জলোচ্ছ্বাসের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতির। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২ সেপ্টেম্বর ''M.R Numan kha" নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি শেয়ার করে লেখা হয়েছে, "আই আল্লাহ আপনি পাকিস্তান বাশিকে ভয়াবহ বন্যা থেকে হেফাজত করুন!" পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটির বর্ণনায় করা দাবিটি সঠিক নয়। পাকিস্তানের বন্যার নয় বরং ২০১১ সালে সুনামির ফলে জাপানের ইশিনোমাকি শহরে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের ভিডিও এটি।
ভিডিওটির কি-ফ্রেম কেটে রিভার্স ইমেজ পদ্ধতিতে সার্চ করে, জাপানের মিডিয়া কর্পোরেশন ফুজি নিউজ নেটওয়ার্কের (এফএনএন) একটি ইউটিউব চ্যানেল 'FNN311'-এ মূল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১২ সালের ২৬ অক্টোবর পোস্ট করা হয়েছে। ইউটিউব চ্যানেলের পরিচিতি সম্পর্কে লেখা হয়েছে, জাপানে ২০১১ সালের ভয়াবহ সুনামির বিভিন্ন ফুটেজ সংরক্ষণে ফুজি নিউজ নেটওয়ার্কের একটি উদ্যোগ এটি। ভিডিওর বিবরণ থেকে জানা যায়, ভিডিওটি জাপানের ইশিনোমাকি শহরের সুনামির দৃশ্য এটি, যা মিয়াগি অঞ্চল থেকে কইচি অ্যাবে নামে একজন ব্যক্তি ইশিনোমাকি গ্যাস ইনকর্পোরেশনের অফিসের ছাদ থেকে ধারণ করেছিলেন। ভিডিওটি দেখুন--
'তাকুরো সুজুকি' নামের আরও একটি ইউটিউব চ্যানেলে একই বিবরণে ভিডিওটি ২০১১ সালের ১৮ ডিসেম্বর আপলোড করতে দেখা গেছে। ভিডিওটি দেখুন--
ইউটিউবের এই ভিডিওর সাথে ফেসবুকে ভাইরাল ভিডিওটির হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ইউটিউব ভিডিও থেকে নেয়া স্ক্রিনশট এবং বিভ্রান্তিকর দাবির ফেসবুক ভিডিওর স্ক্রিনশটের পাশাপাশি তুলনা দেখুন--
বুম বাংলাদেশ গুগল ম্যাপে পাওয়া মিয়াগি ইশিনোমাকি শহরের ইশিনোমাকি গ্যাস ইনক.-এর অবকাঠামোর সাথে সাথে ভাইরাল ভিডিওতে দেখতে পাওয়া অবকাঠামো মিলিয়ে নিশ্চিত হয়েছে, উভয় ভিডিও একই স্থানের বা ইশিনোমাকি শহরের। তুলনা দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওটি ২০১১ সালে সুনামির ফলে জাপানের ইশিনোমাকি শহরে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বন্যার নয়।
প্রসঙ্গত পাকিস্তানে স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। পাকিস্তানের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইসলামাবাদে পৌঁছেছেন।
সুতরাং জাপানের সুনামির পুরোনো একটি ভিডিওকে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বন্যার দাবি করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।