সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, এটি চলতি মে মাসে ভারতের আসাম রাজ্যে বন্যায় একটি সেতু ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। ভিডিওটিতে প্রচণ্ড স্রোতে একটি ব্রিজ ভেঙে চুরমার হয়ে ভেসে যেতে দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৮মে 'Arifur' নামের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে ভারতের আসামে একটি ব্রিজ ধসে গেছে।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। এটি সম্প্রতি ভারতের আসাম রাজ্যে বন্যায় কোন ব্রিজ ভাসিয়ে নেয়ার ভিডিও নয় বরং ২০২১ সালে ইন্দোনেশিয়ায় বন্যায় একটি ব্রিজ ভেঙ্গে পড়ার ভিডিও।
ভিডিওটি থেকে কী-ফ্রেম কেটে সার্চ করার পর,অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এসবিএস নিউজ-এর টুইটার একাউন্টে ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। টুইটারের বিবরণে লেখা হয়েছে, "ইন্দোনেশিয়া ও পূর্ব তিমুরে প্রবল বর্ষণে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, সেতু ভেসে যাওয়ার ফুটেজ রয়েছে ভিডিওটিতে, এই বন্যায় কয়েক ডজন মানুষের মৃত্যু হয়।" ভিডিওটি দেখুন--
এই সুত্র ধরে সার্চ করার পর, ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ট্রিবিউন নিউজের ইউটিউব চ্যানেলে বন্যা সংক্রান্ত খবরের সাথে যুক্ত করা ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়েছে। ভিডিওটিতে ইন্দোনেশীয় ভাষায় লেখা ক্যাপশনটি স্বয়ক্রিয় অনুবাদ করলে দেখা যায় তাতে লেখা হয়েছে,-- "হঠাৎ বন্যায় পূর্ব সুম্বার কাম্বানিরুতে পুরোনো সেতু ভেঙে পড়ার মুহূর্তের দৃশ্য"।
ইউটিউব ভিডিও থেকে নেয়া স্ক্রিনশট এবং বিভ্রান্তিকর দাবির ফেসবুক ভিডিওর স্ক্রিনশটের পাশাপাশি তুলনা দেখুন--
ভিডিওটির বিবরণে সেতুটির নাম কাম্বানিরু সেতু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গুগল স্ট্রিটভিউয়ে কাম্বানিরু সেতুর ছবির সাথে ফেসবুকে ছড়ানো ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়, গুগল স্ট্রিটভিউয়ে ছবিটি ২০১৬ সালে আপডেট করা হয়েছিল।
অর্থাৎ ভিডিওটি ভারতের আসামের নয় বরং ইন্দোনেশিয়ার বন্যার সময় ধারণ করা।
ভিডিওটি এর আগে ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা বুম লাইভ যাচাই করেছে।
সুতরাং ইন্দোনেশিয়ার একটি পুরোনো ভিডিওকে আসামে চলতি মে মাসের বন্যার দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।