সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপ থেকে একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, বাবা-মায়ের বাড়িতে সন্তানের থাকার আইনগত অধিকার আর থাকছে না। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি 'Md Ariful Islam' নামের একটি আইডি থেকে বাবা-মায়ের বাড়িতে সন্তানের থাকার আইনগত অধিকার আর থাকছে না এ সংক্রান্ত একটি রায়ের কথা লেখা একটি কার্ড রিলে পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশ।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
পোস্টকারীর প্রোফাইল ছবি ও পোস্টের ক্যাপশন দেখে স্বাভাবিকভাবেই ব্যবহারকারীরা ধারণা করতে পারেন, এটি বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের রায়।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টটি বিভ্রান্তিকর। এ সংক্রান্ত রায়টি বাংলাদেশের আদালতের নয় বরং এটি ২০১৬ সালে ভারতের দিল্লী হাইকোর্টের দেয়া একটি রায়।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে এ সংক্রান্ত কোনো রায়ের সংবাদগ বাংলাদেশের মূলধারার কোনো গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরে ফটোকার্ডে দেয়া রায়ের তথ্য ইংরেজি ভাষায় কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে ভারতীয় গণমাধ্যম 'The Times of India' তে ২০১৬ সালের ২৯ নভেম্বর "Son has no legal right in parents’ house, can stay at their mercy: Delhi high court" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ভারতের দিল্লী হাইকোর্টের রায় উল্লেখ করে বলা হয়, "পিতা-মাতার নিজের অর্জিত বা নির্মিত বাড়িতে সন্তানের থাকার কোনো আইনী অধিকার নেই। যদি পিতামাতা চান তবেই সন্তান বাড়িতে থাকতে পারবেন। আবার এর মানে এই নয় যে, সন্তানদের বাড়ি থাকার অনুমতি দিয়েছে বলে সন্তানের সারাজীবনের ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতা-মাতাকে বহন করতে হবে।" স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া, ইংরেজি কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর 'The Economics Times' এ "Son has no legal right in parent’s house, can stay at their mercy: Delhi High Court" শিরোনামের একটি প্রতিবেদনেও একই তথ্য দেয়া হয়। এছাড়া, দিল্লি হাইকোর্টের এই রায় ভারতের অন্য হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতগুলোতেও প্রযোজ্য হবে বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ বাবা-মায়ের বাড়িতে সন্তানের অবস্থান করার আইনগত অধিকার আর থাকছে না মর্মে রায়টি ভারতের দিল্লি হাইকোর্টের, বাংলাদেশের নয়।
সুতরাং, ভারতের দিল্লি হাইকোর্টের একটি রায় বিভ্রান্তিকরভাবে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে।