সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে সাদা কাফনের কাপড় পরে মাটিতে শুয়ে থাকা কিছু ব্যক্তির দুটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ভারতের দিল্লির মসজিদে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা ব্যক্তিদের ছবি এগুলো। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৪ এপ্রিল 'Md Ashraf Shoudagor' নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করে লেখা হয়, "কলিজা ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে হে মালিক দিল্লির মসজিদে যেসব হিন্দুরা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে আমাদের ভাইদের শহীদ করেছে তুমি শহীদ ভাইদের রক্তের বিনিময়ে ভারতের শাসন ক্ষমতা মুসলমানদের হাতে কবুল করে মোদি সরকারকে ফেরাউনের মতো পতন ঘটিয়ে দাও আমিন।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি অসত্য । ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের মহারাষ্ট্র প্রদেশের আওরঙ্গবাদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশের ছবি এগুলো।
ছবিগুলো রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে, জেজেপি নিউজ নামে একটি স্থানীয় নিউজ পোর্টালে ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ থেকে জানা যায়, প্রতিবাদ সমাবেশটি তৎকালে চলমান রাজধানী দিল্লির শাহিনবাগে অবস্থান-বিক্ষোভের প্রতি সমর্থন জানাতে আয়োজন করা হয়েছিল। সমাবেশে আন্দোলনকারীরা কাফনের সাদা কাপড় পরে প্রতিবাদে অংশ নেন। প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
আবার খেয়াল করলে দেখা যায়, ভাইরাল পোস্টের একটি ছবিতে 'সিএএ এনআরসি' লেখা আছে।
অভিনব প্রতিবাদের ছবিগুলো এর আগেও আওরঙ্গবাদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে বিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশের বলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। এরকম একটি টুইট দেখুন--
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, ইউটিউবে প্রতিবাদ সমাবেশটির একটি ভিডিও ফুটেজ খুঁজে পাওয়া গেছে, যা একইদিন অর্থাৎ ২০২০ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হয়েছে।
অর্থাৎ ছবিগুলো একটি প্রতীকী প্রতিবাদ সমাবেশের, মৃত ব্যক্তিদের নয়।
সুতরাং ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রতিবাদ সমাবেশের ছবিকে দিল্লির মসজিদে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা ব্যক্তিদের বলে দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা অসত্য।