সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে মাটির নিচে মাথা ব্যতিত শরীর পুঁতে রাখা এক ব্যক্তির ছবি শেয়ার করে বলা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি ৩২ বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন কিন্তু তিনি অক্ষত রয়েছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর "❤️আমরা বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ ❤️" নামের একটি পাবলিক গ্রুপে "Monirul Islam" নামের একটি আইডি থেকে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "তিনি ৩২ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন,যখন তাকে কবর থেকে উঠানো হয় মনে হচ্ছিলো, তিনি কয়েক ঘন্টা আগে ঘুমিয়েছিলেন, এটি সম্মানজনক মৃত। আল্লাহ আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করার তৌফিক দান করুন, আমীন /❤️🩹"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, উক্ত পোস্টে করা দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি কোনো মৃত ব্যক্তির নয়, ২০১৯ সালে পাকিস্তানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আহত এক ব্যক্তিকে কাদামাটির থেরাপির মাধ্যমে কবিরাজি চিকিৎসা দেওয়ার সময়ে ছবিগুলো তোলা হয়।
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সামাজিক মাধ্যম টুইটারে "True Journalizm" নামে একটি আইডিতে ২০১৯ সালের ২৩ জুন একটি পোস্টে আলোচ্য ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। ওই পোস্ট থেকে জানা যায়, একটি মেয়ের বাবা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন। মেয়েটি তার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। টুইটার পোস্টটি দেখুন--
আরো সার্চ করে ২০১৯ সালের ২২ জুন অর্থাৎ কাছাকাছি সময়ে 'Ali Sherazi' নামের এক ব্যক্তির ফেসবুক পেজ থেকে করা এক পোস্টেও আলোচ্য ছবিগুলো পাওয়া যায়। আলি শেরাজি ফেসবুকে নিজেকে লেখক, মোটিভেশনাল স্পিকার ও সমাজকর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ওই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, একটি মেয়ে এই ছবিগুলো পাঠিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞান তার বাবার জন্য দোয়া চেয়েছেন। অর্থাৎ টুইটারে যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে একই রকম বর্ণনা দিয়েছেন আলি শেরাজি। স্ক্রিনশট দেখুন--
উল্লেখ্য পাকিস্তানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ব্যক্তিকে কাদামাটির থেরাপি দিয়ে অর্থ্যাৎ মাটি দিয়ে ঢেকে রেখে চিকিৎসা করার একটি অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি চালু আছে, যেটিকে নিরুৎসাহিত করে পাকিস্তানের শিয়ালকোটের একটি হসপিটালকে তাদের ফেসবুক পেজে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। দেখুন এমন একটি ফেসবুক পোস্ট--
অর্থ্যাৎ পাকিস্তানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সংজ্ঞাহীন এক ব্যক্তির ছবিকে ৩২ বছর আগে মৃত ব্যক্তির ছবি দাবিতে ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।