বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল 'ডিসকভারি চ্যানেল' দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে তিন শিশুর দ্বীপে বসবাসের উদ্দেশ্যে ঘর পালানোর একটি খবরের লিংক সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে পোস্ট করা হয়েছে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে বলেও খবরটিতে উল্লেখ করা হয়। খবরটির সাথে পুলিশের সাথে উদ্ধারকৃত শিশুদের একটি ছবিও যুক্ত করা আছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
'M Alan' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত ১১ আগস্ট অখ্যাত একটি অনলাইন পোর্টালের লিংক পোস্ট করে লেখা হয়, 'ডিসকভারী দেখে পোকা-মাকড় খেয়ে জঙ্গ'লে বাস করার উদ্দেশ্যে বাড়ি ছেড়েছিল তিন শিশু!'।
হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টালের খবরটির ডেটলাইনে প্রকাশের তারিখ '১৬ জুন, ২০২১' উল্লেখ করা হয়েছে এবং অযাচিত যতি চিহ্ন সহ বর্ননায় লেখা হয়েছে-
"পোকা মাকড় খেয়ে দ্বীপে বসবাস করবে বলে বাড়ি থেকে গত সোমবার পা'লিয়ে আসে। এ তিন শি'শুকে আমতলী থা'না পু'লিশ মঙ্গলবার রাত ৮টায় সমুদ্র সৈকত কুয়াকা'টা যাওয়ার পথে আমতলী লঞ্চঘাট থেকে উ'দ্ধার করে হেফাজতে রাখে। প'ড়ে অভিভাবকদের খবর দেয়া হয়।"
অর্থাৎ ফেসবুকে পোস্ট ও অনলাইনে খবরটি প্রকাশের ডেটলাইন এবং বর্ননা দেখে মনে হচ্ছে ঘটনাটি সাম্প্রতিক।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, এটি সাম্প্রতিক ঘটনা নয়।
বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার পর দেখা গেছে, অনলাইন পোর্টালের খবরটিও কপি করা। ২০১৮ সালের ২০ জুন দৈনিক যুগান্তর অনলাইন ভার্সনে "ডিসকভারি চ্যানেল দেখে দ্বীপে বসবাসের পরিকল্পনা ৩ শিশুর, অতঃপর..." শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি কপি করে 'কপিরাইট' এড়াতে বাক্য ও শব্দের মাঝে অযাচিত যতি চিহ্ন দিয়ে আলোচ্য খবরটি ফেসবুকে ভাইরাল করা হচ্ছে। তবে কয়েকটি শব্দ পরিবর্তন করতে দেখা গেছে। এছাড়া, অনলাইন পোর্টালে ব্যবহৃত ছবিটিও উক্ত ঘটনার বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
খবরটি সে সময় দেশের একাধিক গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছিলো। এমন কিছু খবর দেখুন এখানে ও এখানে।
অর্থাৎ ভিন্ন একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রায় তিন বছর পুরনো একটি খবর হুবহু কপি করে নতুন ডেটলাইনে কোন সূত্র উল্লেখ করা ছাড়াই অনলাইন পোর্টালটিতে প্রকাশিত হয়েছে।
সুতরাং দ্বীপে বসবাস করতে ঘর পালানোর পর ৩ শিশু উদ্ধারের তিন বছরেরও বেশি পুরোনো একটি খবরকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।