ভিয়েতনামের একটি গ্রামে পলিব্যাগে ভরে বাবারা সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন বলে ছবিসহ একটি খবরের লিংক সম্প্রতি ফেসবুকের একাধিক পেজ, আইডি ও গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছে। অখ্যাত কিছু অনলাইন পোর্টালের এ সংক্রান্ত খবরের সাথে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি বড় একটি পলিব্যাগে স্কুল ব্যাগ, জামা-কাপড়সহ এক বাচ্চাকে ঢোকাচ্ছেন এবং অন্য ছবিতে পলিব্যাগের মুখ বন্ধ করে পানিতে সাঁতার কাটছেন। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
'Daily News BD' নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে গত ১৫ আগস্ট এমন একটি খবরের লিংক পোস্ট করে লেখা হয়, 'পলিথিনে ভরে সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন বাবা'।
হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টালের লিংকে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবেদনটির ডেটলাইনে প্রকাশের তারিখ হিসাবে '2 days ago' উল্লেখ করা আছে। ডেটলাইনে খবরটির সুনির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ না থাকায় প্রকাশের সঠিক তারিখ সম্পর্কে ধারনা না করা গেলেও, খবরটির ডেটলাইন ও ফেসবুকে প্রকাশের দিনক্ষণ থেকে মনে হয় ঘটনাটি সাম্প্রতিক।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, এটি সাম্প্রতিক ঘটনা নয়।
বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার পর দেখা গেছে, ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই অনলাইন পোর্টাল ডেইলি বাংলাদেশ "পলিথিনে ভরে সন্তানকে স্কুলে পৌঁছে দিচ্ছেন বাবা!" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটিকে হুবহু কপি করে, কপিরাইট এড়াতে বাক্য ও শব্দের মাঝে অযাচিত যতি চিহ্ন ব্যবহার করে আলোচ্য অনলাইন পোর্টালগুলোতে নতুন খবর হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে। অনলাইন পোর্টালে ব্যবহৃত ছবিটিও উক্ত ঘটনার বলে নিশ্চিত হয়েছে বুম বাংলাদেশ। ডেইলি বাংলাদেশ-এর প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
খবরটি তৎকালে বৃটিশ সংবাদমাধ্যম 'মিরর' এর বরাত দিয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিলো। তন্মধ্যে সময় টেলিভিশনের অনলাইন ভার্সনে খবরটি দেখুন এখানে।
বিস্তারিত সার্চ করার পর "Children travel in plastic bags across flooded river so they can go to school" শিরোনামে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিরর-এর অনলাইনে ভার্সনে ২০১৯ সালের ১৬ জুলাই প্রকাশিত মূল খবরটিও খুঁজে পেয়েছে বুম বাংলাদেশ। খবরটিতে বলা হয়, উত্তর-পশ্চিম ভিয়েতনামের হুওউ হাই গ্রামের ৫০ জন শিশুকে 'নাম মা' নদী পার করে প্রতিদিন তাদের বাবারা এভাবে স্কুলে পৌঁছে দেন।
অর্থাৎ ভিন্ন একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত দুই বছর পুরনো খবর হুবহু কপি করে নতুন ডেটলাইনে সম্প্রতি ভাইরাল খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে।
সুতরাং পলিব্যাগে ব্যাগে ঢুকিয়ে শিশুদের নদী পার করে স্কুলে পৌঁছানোর দুই বছর পুরোনো খবরকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।