সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে জার্মানির একটি শহরে মাইকে আজান দেয়ার বিরুদ্ধে করা মামলায় মুসলিমরা জয়ী হয়েছেন মর্মে একটি খবর সম্প্রতি অনলাইন পোর্টালের লিংক একাধিক আইডি ও পেজ থেকে পোস্ট করা হয়েছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
'Syed Ratno' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে গত ২৭ জুন অখ্যাত একটি অনলাইন পোর্টালের লিংক পোস্ট করে বলা হয়, 'জার্মান শহরে মাইকে আজান নিষিদ্ধের মামলায় জয়ী হলেন মুসলিমরা'।
অনলাইন পোর্টালের লিংকে গিয়ে দেখা যায় প্রতিবেদনটির ডেটলাইনে প্রকাশের তারিখ '২৭ জুন, ২০২১' উল্লেখ করা আছে এবং খবরের বর্ণনায় বলা হয়, "টানা পাঁচ বছরের আইনি লড়াই শেষে বুধবার মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন জার্মান আদালত।" অর্থাৎ, ডেটলাইন দেখে মনে হচ্ছে এটি সাম্প্রতিক ঘটনা ও বর্ণনা দেখে মনে হচ্ছে ঘটনাটি জুন মাসের ২৭ তারিখের আগের বুধরারে ঘটা। খবরটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, এটি সাম্প্রতিক ঘটনা নয়।
বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার পর দেখা গেছে, ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাগো নিউজ-এ "জার্মান শহরে মাইকে আজান নিষিদ্ধের মামলায় জিতলেন মুসলিমরা" শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে আলোচ্য খবরটি হুবহু কপি করা হয়েছে। দেখুন জাগো নিউজের প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট--
জাগো নিউজের প্রতিবেদনে, কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার তথ্যসুত্র ব্যবহার করা হয়েছে। গুগল সার্চ করে আল জাজিরার মূল প্রতিবেদনটি খুঁজে পাওয়া গেছে। আল-জাজিরা বলছে, ২০১৫ সালে জার্মানির নর্থ রাইন-ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের ছোট শহর ওয়ের-আর্কেনশ্ভিক-এ অবস্থিত একটি মসজিদে মাইক ব্যবহারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন এক দম্পতি। মসজিদ থেকে ৯০০ মিটার দূরে অবস্থিত একটি বাড়ির ওই দম্পতির অভিযোগ মাইকের এই শব্দ তাঁদের ধর্মীয় স্বাধীনতাকে আহত বা ব্যাহত করছে। দীর্ঘ পাঁচ বছর আইনি লড়াই শেষে আদালত মুসলিমদের পক্ষে রায় দেন, যেখানে শুক্রবার দুপুরে নামাজের সময় আগের মতই ১৫ মিনিট মাইক ব্যবহার করা যাবে। আল জাজিরার প্রতিবেদনটি দেখুন এখানে।
এছাড়া, সে সময়ে বাংলাদেশের মূলধারার একাধিক গণমাধ্যমেও খবরটি প্রকাশিত হয়েছিল। এমন কিছু প্রতিবেদন দেখুন এখানে, এখানে। দৈনিক যুগান্তরের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত খবরটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ, সাম্প্রতিক তারিখ ব্যবহার করে গতবছরের এই খবরটিকে একাধিক অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুকে সুত্রহীনভাবে পোস্ট করা হচ্ছে।
সুতরাং, মাইকে আজান নিষিদ্ধের মামলায় জার্মানির একটি শহরে মুসলিমদের বিজয়ের পুরোনো খবরকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।