সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে একাধিক ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, এক নারী একই সাথে তিনটি ছেলেশিশুর জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে শিশু তিনটি অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও তাদের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। পোস্টটি দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৪ এপ্রিল '(Allah is one _আল্লাহ এক)' নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে 'জান্নাত আহসান' নামের একটি আইডি থেকে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, ছবিতে দৃশ্যমান তিন ছেলে শিশুর পিতার নাম রফিক মিয়া, যার বাড়ি গাজীপুরের স্রীনগরে। ওই পোস্টে শিশুটির অসুস্থতার মানবিক বর্ণনা দিয়ে তাদের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়। সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদের হিসেব খোলা এমন একটি নম্বরও যুক্ত করা হয়। স্ক্রিনশটে দেখুন বিস্তারিত--
উক্ত পোস্টের ছবিগুলোও আলাদাভাবে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভাইরাল পোস্টে করা দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি গাজীপুরের শ্রীনগরের রফিক মিয়ার স্ত্রীর নয় বরং হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার আবদুস সালামের স্ত্রী রহিমা বেগম নামের এক নারীর তিন কন্যা সন্তান জন্মদানের ঘটনার।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ছবিটি ঢাকা ট্রিবিউন অনলাইন পত্রিকায় ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট "একসঙ্গে তিন কন্যার জন্ম দিলেন নারী, নেই চিকিৎসার সামর্থ্য" শিরোনামে প্রকাশিত একটি খবরে পাওয়া গেছে। খবরটিতে বলা হয়, "অস্ত্রোপচার ছাড়াই একসঙ্গে তিন কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছেন হবিগঞ্জের মাধবপুরে রহিমা বেগম নামের এক নারী। বুধবার (১৮ আগস্ট) সকালে মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে তিনি সন্তানদের প্রসব করেন।" এছাড়া, ওই নারীর স্বামীর নাম আব্দুস সালাম উল্লেখ করে হাসপাতালের চিকিৎসকের বরাত দিয়ে জানানো হয়, শিশু তিনটি এবং তাদের মা সুস্থ আছেন। দেখুন খবরটির স্ক্রিনশট--
এছাড়া, ঢাকা ট্রিবিউন অনলাইনে প্রকাশিত খবরের সাথে যুক্ত ছবি ও ভাইরাল পোস্টের প্রথম ছবিটি পাশাপাশি দেখুন--
অর্থাৎ ছবিটি ২০২০ সালের ১৯ আগস্ট হবিগঞ্জের মাধবপুরের রহিমা বেগম নামের এক নারীর তিন কন্যা সন্তান জন্মদানের ঘটনাটিকে গাজীপুরের শ্রীনগরের রফিক মিয়ার স্ত্রীর সম্প্রতি তিন ছেলে সন্তানের জন্মদানের ঘটনা বলে দাবি করা হচ্ছে। পাশাপাশি আর্থিক সাহায্যেরও আবেদন করা হচ্ছে।
সুতরাং দুই বছর আগের হবিগঞ্জের একটি ঘটনার ছবিকে গাজীপুরের ঘটনা দাবি করে অর্থ সাহায্য চাওয়া হচ্ছে ফেসবুকে, যা প্রতারণাপূর্ণ।