সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে পোস্ট করে বলা হচ্ছে, সম্প্রতি ইরানে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এরকম কয়েকটিব পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে।
গত ১৩ মে 'Mohammad Rasel' নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করে বলা হয়, "আলহামদুলিল্লাহ ❤️✨ অবশেষে নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করেছেন ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি 🇮🇷💜"। পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি ইরানে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ইরানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ইব্রাহীম রাইসি দায়িত্ব গ্রহণ করেন ২০১৯ সালে। তবে ইরানে ১৯৭৯ সাল থেকেই নারীদের জন্য হিজাব পরা বাধ্যতামূলক।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির বাংলা ভার্সনের ওয়েবসাইটে গত ৯ এপ্রিল 'হিজাব না পরা নারীদের শনাক্ত করতে গোপন ক্যামেরা বসাচ্ছে ইরান' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইরানে ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকে ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী আইনগতভাবে নারীদের চুল এবং মুখমণ্ডল আবৃত করে হিজাব পরার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ওই বছরের ৭ মার্চ আয়াতুল্লাহ খোমেনির এক ডিক্রির প্রতিবাদে ইরানের নারীরা প্রতিবাদ করলেও ১৯৮১ সালে নারী ও কিশোরীদের ইসলামি রীতি অনুযায়ী আব্রু রক্ষা করার উপযোগী পোশাক পরা আইনত বাধ্যতামূলক করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো সার্চ করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আরব নিউজে ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর 'Iran’s hijab law under review: attorney general' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন-সমর্থিত রাজতন্ত্র উৎখাত করে ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের চার বছর পর ১৯৮৩ সালের এপ্রিল মাসে ইরানের সমস্ত মহিলাদের জন্য হিজাব বা হেডস্কার্ফ বাধ্যতামূলক করা হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল প্রথম আলোর অনলাইন ভার্সনে 'হিজাব ইরানে আইনি বিষয়: রাইসি' শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছেন, তাঁর দেশে হিজাব একটি আইনি বিষয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থ্যাৎ ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লবের পর থেকেই আইন করে ইরানে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়, এটি সাম্প্রতিক কোনো বিষয় নয়।
সুতরাং ৪০ বছরেরও অধিক পুরোনো একটি খবরকে সাম্প্রতিক দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।