সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে একটি তথ্য শেয়ার করে লেখা হয়েছে, ভারতের বেঙ্গালুরে ইসলামের নবী মোহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবরের সাথে তিনটি ছবির একটি কোলাজও যুক্ত করা আছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২১ মে '0 Sυмon-বাঙালী彡' নামের ফেসবুক পেজ থেকে কোলাজ ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "ভারতের বেঙ্গালরে বিশ্ব নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে নিয়ে কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন ৩ আশেকে রাসুল।" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, খবরটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২ বছর পুরোনো। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরে সামাজিক মাধ্যমে করা এক পোস্টকে কেন্দ্র করে ঘটা সহিংসতায় তিন জনের মৃত্যুর খবরটি ২ বছর আগে ২০২০ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
কি-ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি'র বাংলা সংস্করণে ২০২০ সালের ১২ আগস্ট "ভারতে ইসলামের নবী মোহাম্মদকে নিয়ে পোস্টের জেরে সহিংসতা, পুলিশের গুলিতে ৩ জনের মৃত্যু" শিরোনামে খবরটি খুঁজে পাওয়া গেছে। খবরটিতে বলা হয়,
"সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা এক পোস্টকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ভারতের ব্যাঙ্গালোর শহরে মঙ্গলবার রাত থেকে ব্যাপক সহিংসতায় অন্তত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। বিবিসি এশিয়ার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইসলামের নবী মোহাম্মদকে নিয়ে ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালালে ওই তিনজন ব্যক্তি মারা যান। স্থানীয় একজন রাজনীতিবিদের আত্মীয় যিনি ফেসবুকে ওই 'আপত্তিকর' পোস্ট দিয়েছিলেন, তার বাড়ির সামনে বিক্ষুব্ধ মানুষজন তাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে বলে বিক্ষোভ করছিল।" স্ক্রিনশট-
একই বিবরণে খবর খুঁজে পাওয়া গেছে হিন্দুস্তান টাইমস, নিউজ উইক সহ একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। কর্ণাটকের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ডেকান হেরাল্ড-এ প্রকাশিত খবরে নিহতদের নাম, ওয়াজিদ খান (১৯) ইয়াসিন পাশা (২০) শেখ সিদ্দিক (২৪) বলে উল্লেখ করেছে।
অর্থাৎ খবরটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২ বছর আগের একটি সহিংসতার।
ছবিটি উৎস
রিভার্স সার্চ করার পর, মুসলিম মিরর নামে একটি অনলাইন ভিত্তিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট "Insults of Prophet Muhammad lead to violence in India" শিরোনামে প্রকাশিত খবরের সাথে খুঁজে পাওয়া গেছে। তবে এই ছবিটি অন্য কোনো নির্ভরযোগ্য সংবাদমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে বুম বাংলাদেশ ছবিগুলো পৃথক কোন উৎস থেকে আলাদাভাবে যাচাই করতে পারেনি। স্ক্রিনশট দেখুন--
সুতরাং ভারতের কর্নাটক রাজ্যের সহিংসতার দুই বছর পুরোনো খবরকে অপ্রসঙ্গিকভাবে নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।