সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ থেকে অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে, আলোচিত শিক্ষিকা খাইরুনের মৃত্যুর ঘটনায় স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের খবর দেয়া হচ্ছে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২২ আগস্ট 'শাহনাজ পুতুল' নামের ফেসবুক আইডি থেকে অখ্যাত একটি অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে লেখা হয়, "ব্রেকিংঃ শিক্ষিকা খাইরুনের মৃত্যু, স্বামী মামুনের মৃত্যুদন্ড ঘোষণা আদালত!"। স্ক্রিনশট দেখুন--
খবরের বিষয়বস্তুতে লেখা হয়েছে, "গত ৩০ জুলাই ফেসবুকে ৪২ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষক খাইরুন নাহারকে বিয়ে করা নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দেন কলেজছাত্র ২০ বছরের মামুন হোসেন। ১৩ মাসের গল্প শিরোনামে মামুন লেখেন ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। তারপর দু'নের মনের লেনদেন। তারপর বিয়ের সিদ্ধান্ত। দু'জন সুখে থাকলেও নানা মানুষের বিরূপ কথা শুনতে হচ্ছে, এমন পোস্ট নজরে আসে স্থানীয় সাংবাদিক মেহেদী হাসান তানিম ও নাজমুল হাসান নাহিদের। পরে তানিম মোবাইল ফোনে খাইরুন-মামুন দম্পতির সাথে যোগাযোগ করলে তাদের ভালোবাসার বিয়ের খবরটি সুন্দরভাবে উপস্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেন।" খবরের স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, শিরোনামে করা দাবিটি ভিত্তিহীন আর বিস্তারিত অংশের বিষয়বস্তুর খবরটিও ভিন্ন।
কি ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর দেখা গেছে, অনলাইন পোর্টালের খবরের বিষয়বস্তু পুরোনো একটি খবর থেকে কপি করা। ১৫ আগস্ট সংবাদমাধ্যম যমুনা টেলিভিশনের অনলাইন সংস্করণে "শিক্ষক-ছাত্র দম্পতি চেয়েছিলেন তাদের প্রেমকাহিনি সবাই জানুক" শিরোনামে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, "গত ৩০ জুলাই ফেসবুকে ৪২ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষক খাইরুন নাহারকে বিয়ে করা নিয়ে আবেগঘন পোস্ট দেন কলেজছাত্র ২০ বছরের মামুন হোসেন। ১৩ মাসের গল্প শিরোনামে মামুন লেখেন ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়। তারপর দুজনের মনের লেনদেন। তারপর বিয়ের সিদ্ধান্ত। দু'জন সুখে থাকলেও নানা মানুষের বিরূপ কথা শুনতে হচ্ছে, এমন পোস্ট নজরে আসে স্থানীয় সাংবাদিক মেহেদী হাসান তানিম ও নাজমুল হাসান নাহিদের। পরে তানিম মোবাইল ফোনে খাইরুন-মামুন দম্পতির সাথে যোগাযোগ করলে তাদের ভালোবাসার বিয়ের খবরটি সুন্দরভাবে উপস্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরের দিন ৩১ জুলাই সকাল ১১টার দিকে নাটোর শহরের বলারিপাড়া এলাকায় যান ওই দুই গণমাধ্যমকর্মী। আগে থেকেই বাসার নিচে অপেক্ষারত মামুন হাজী নান্নু ম্যানশনের তিনতলার একটি ফ্লাটে মামুন তাদের নিয়ে যান। গণমাধ্যমে কথা বলার জন্য দু'জনই পরিপাটি হয়ে ঘর গোছগাছ করে রেখেছিলেন।" স্ক্রিনশট দেখুন--
যমুনা টিভি'র অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটিকেই সামান্য পরিবর্তনসহ কপি করে আলোচ্য অনলাইন পোর্টালতে প্রকাশ করা হয়েছে। অনলাইন পোর্টালের খবর ও মূল খবরের পাশাপাশি স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ অখ্যাত পোর্টালে প্রকাশিত খবরের শিরোনামের সাথে বিষয়বস্তুর কোনো মিল নেই। খবরটির শিরোনামে এক ধরনের তথ্য দেয়া হলেও খবরে বিস্তারিত অংশে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য নেই।
প্রসঙ্গত গত ১৪ আগস্ট নাটোরে ছাত্রের মধ্যে প্রেম ও পরে বিয়ে নিয়ে আলোচিত কলেজ শিক্ষক খাইরুন নাহারের মৃতদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ খাইরুন নাহারের স্বামী কলেজ ছাত্র মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করার খবর প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমে।
সুতরাং চটকদার শিরোনাম দিয়ে বিস্তারিত অংশে ভিন্ন তথ্য উল্লেখ করে পুরোনো খবর কপি করে একাধিক অনলাইন পোর্টালে প্রকাশ করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।