সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি, পেজ ও গ্রুপে বেসরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরটিভির লোগো যুক্ত করে তৈরি একটি ফটোকার্ড পোস্ট করা হচ্ছে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাতে বলা হচ্ছে, বিবেক কাজ করলে নিজেকে এত বড় পাপ কাজে জড়াতাম না। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২১ মার্চ 'Md. Obydullah' নামের একটি আইডি থেকে আরটিভির লোগো যুক্ত করে তৈরি একটি গ্রাফিক ছবি পোস্ট করা হয়। ওই গ্রাফিক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি যুক্ত করে লেখা হয়, "বিবেক কাজ করলে নিজেকে এত বড় পাপে জড়াতাম না।" এছাড়া পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, "আমার তখন বিবেক কাজ করে নাই আবেগ কাজ করছে।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ফটোকার্ডটি এডিটেড। মূলত আরটিভির পুরোনো একটি ফটোকার্ড ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্পাদনা করে সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি বসিয়ে ফটোকার্ডটি বানানো হয়েছে।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আরটিভির লোগো ব্যবহার করে তৈরি ডিজিটাল কার্ডের অনুরূপ শেখ হাসিনার কোনো বক্তব্য গণমাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে "বিবেক কাজ করলে নিজেকে এত বড় পাপে জড়াতাম না" শিরোনামে আরটিভির অনলাইনে ২০২৩ সালের ৩ অক্টোবর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে চট্টগ্রামে মো. হাসান নামের এক ব্যক্তির নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পুত্রবধূ অভিযুক্ত আনার কলিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) গ্রেফতারের পর তার বক্তব্য যুক্ত করা হয়। ওই প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আনার কলি বলেন, "আমি দোষী, আমি কি আপনাদের একবারও বলেছি আমি নির্দোষ। তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি। তখন যদি আমার বিবেক কাজ করতো, তাহলে এত বড় পাপে নিজেকে জড়িয়ে পড়তাম না। কারও কথা না ভাবলেও একবার আমার সন্তানের কথা ভাবতাম। আমি আমার সন্তানের কথা পর্যন্ত ভাবিনি।" স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে, ভাইরাল ফটোকার্ডটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ফটোকার্ডটির ওপরে ৩ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে। কি-ওয়ার্ড সার্চ করে আরটিভির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ওই দিন বা তার আগে-পরে এ ধরণের কোনো ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ওই দিনে "বিবেক কাজ করলে নিজেকে এত বড় পাপে জড়াতাম না" মন্তব্যযুক্ত অন্য একটি ফটোকার্ড খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে প্রতিবেদনে উল্লেখিত আনার কলির ছবি যুক্ত করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়। পোস্টটি দেখুন--
আরটিভির ফেসবুক পেজে পাওয়া ফটোকার্ড (বামে) এবং আলোচ্য ভাইরাল ফটোকার্ড (ডানে) দু'টির মধ্যে পার্থক্য দেখুন পাশাপাশি--
অর্থাৎ আরটিভির ফেসবুক পেজে প্রচারিত চট্টগ্রামের একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির মন্তব্য সম্বলিত একটি ফটোকার্ডে ডিজিটাল প্রযুক্তির সহায়তায় সম্পাদনা করে অভিযুক্তের জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর ছবি বসানো হয়েছে।
সুতরাং আটিভির একটি পুরোনো ফটোকার্ড এডিট করে শেখ হাসিনার ছবি বসিয়ে তা বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে।