সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, সম্প্রতি তিনি সরকারি চাকরিতে সব ধরণের কোটা বাতিল করেছেন। এরকম দুটি ভিডিও পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ১৯ জুলাই 'Nylon Hut' নামের একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "সব কোটা বাতিল করলেন।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
এই শর্ট ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, "কোটাই থাকবে না। কোনও কোটারই দরকার নেই। কোটা-টোটার দরকার নেই, ঠিক আছে, বিসিএস যেভাবে পরীক্ষা হবে - মেধার মাধ্যমে সব নিয়োগ হবে।"
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। সরকারি চাকরিতে সব ধরণের কোটা বাতিল করে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্যটি সাম্প্রতিক নয় বরং ভিডিওটি ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে দেয়া।
আলোচ্য ভিডিওতে দেওয়া শেখ হাসিনার বক্তব্য সংশ্লিষ্ট কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "কোটা পদ্ধতিরই দরকার নেই" শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও খূঁজে পাওয়া যায়। যেই ভিডিওটি ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে আলোচ্য ভিডিওর অনুরূপ বেশভূষায় দেখা যায়। ১৩ মিনিটের ওই প্রতিবেদনে ৯ মিনিট ৩ সেকেন্ড থেকে ৯ মিনিট ১৫ সেকেন্ড পর্যন্ত অংশে আলোচ্য ভিডিওর সঙ্গে হুবহু মিল পাওয়া যায়। ভিডিওটি দেখুন--
নিচে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচারিত আলোচ্য ভিডিওর স্ক্রিনশট (বামে) এবং ২০১৮ সালে যমুনা টিভিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের স্ক্রিনশটের (ডানে) মধ্যে মিল দেখুন পাশাপাশি--
এছাড়াও কি-ওয়ার্ড সার্চ করে "কোটা পদ্ধতি বাতিল: প্রধানমন্ত্রী" শিরোনামে ডেইলি স্টার অনলাইনে প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিলের একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধিৃতি দিয়ে বলা হয়, "সংস্কার করতে গেলে কয়েকদিন পর আবার আরেক দল এসে বলবে আবার সংস্কার চাই। কোটা থাকলেই সংস্কার করতে হবে। আর না থাকলে সংস্কারের কোনো ঝামেলাই নাই। কাজেই কোটা পদ্ধতি থাকারই দরকার নাই।" স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ কোটা বাতিল সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যটি সাম্প্রতিক নয় বরং ২০১৮ সালের ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে দেয়া।
সুতরাং ২০১৮ সালের কোটা বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সংসদে দেয়া বক্তব্যের পুরোনো ভিডিও সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।