সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি অসুস্থ শিশু ও তাঁর অভিভাবকের ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, শিশুটির নাম 'তাহমিদ'। এছাড়া, পরিচয় হিসেবে পোস্টগুলোতে শিশুটির অবিভাবকের নাম বা ঠিকানা দেয়া হয়নি। বলা হয়েছে, শিশুটির চিকিৎসা করতে হলে ২০/২৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। পাশাপাশি আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবা দাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ এর হিসাব নম্বরও জুড়ে দেয়া হয়েছে পোস্টগুলোতে। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২ জানুয়ারি 'Shila Khanom' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে করা এরকম একটি পোস্ট স্ক্রিনশটে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টের বর্ণনায় করা তথ্য বিভ্রান্তিকর ও সাহায্যের আবেদন প্রতারণাপূর্ণ। ছবিগুলো সাম্প্রতিক সময়ে রোগাক্রান্ত বাংলাদেশের কোনো শিশুর নয় বরং ছবিটি মুস্তাফা নামে ভারতীয় এক শিশুর।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ভারতের অসহায় মানুষদের জন্য তহবিল সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান কিটো-এর (www.Ktto.org) ওয়েবসাইটে "My Son Is Suffering From Heart Defect. We Need Your Help To Provide For His Treatment' শিরোনামে একটি নিবন্ধে ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, ছবির শিশুর নাম মোহাম্মদ মুস্তাফা। শিশুটি হৃদরোগে ভুগছিল। নিবন্ধটি থেকে জানা যায় পর্যাপ্ত আর্থিক সাহায্য লাভের পর গত ২২ ডিসেম্বর শিশুটির জন্য তহবিল সংগ্রহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তার চিকিৎসার জন্য আর অর্থের প্রয়োজন নেই। স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, ক্রাউডফাইন্ডিং প্ল্যাটফর্মটির অফিশিয়াল ফেসবুক একাউন্টেও গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর সর্বশেষ শিশুটির জন্য অর্থ সহায়তা চেয়ে পোস্ট করতে দেখা গিয়েছিলো। দেখুন--
অর্থাৎ নিশ্চিতভাবেই ছবিটি বাংলাদেশি কোন শিশুর নয়। পাশাপাশি পোস্টগুলোতে সহযোগিতা পাঠানোর জন্য দেয়া নম্বরটিতে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে। এর আগে বুম বাংলাদেশ আরেক ভারতীয় শিশুর ছবিকে বাংলাদেশি শিশু দাবি করে একই নাম ও একই রোগের বর্ণনা সহ করা প্রতারনাপূর্ন ফেসবুক পোস্ট চিহ্নিত করেছিল।
সুতরাং ভারতীয় শিশুর ছবি জুড়ে দিয়ে তাকে বাংলাদেশি শিশু দাবি করে সামাজিক মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য তথ্য ছাড়াই আর্থিক সহায়তার আবেদন জানানো হচ্ছে, যা প্রতারণাপূর্ণ।