সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে অসুস্থ এক শিশু ও অবিভাবকের একাধিক ছবি দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, শিশুটির নাম সায়েমা, নীলফামারীর বাদল মিয়ার সন্তান, শিশুটি অনেকদিন ধরে কিডনি ও হার্টের রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। দেখুন এমন কিছু পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৫ নভেম্বর 'Jasmin Akter Juthi' নামের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে একটি গ্রুপে দুটি ছবিসহ একটি পোস্ট করা হয়। সেখানে বলা হয়, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মো বাদল মিয়ার সন্তান সায়মা কিডনি ও হার্টের রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। পোস্টটিতে আর্থিক সাহায্য পাঠানোর জন্য মুঠোফোনে আর্থিক লেনদেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদের হিসেব খোলা ফোন নম্বরও যুক্ত করা আছে। দেখুন সেই পোস্টের স্ক্রিনশট--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিগুলো বাংলাদেশের কোনো শিশুর নয় বরং ভারতীয় এক নবজাতকের। রিভার্স ইমেজ সার্চিং টুল ব্যবহার করে ছবিগুলো সামাজিক মাধ্যমসহ একটি ওয়েবসাইটে বিস্তারিত তথ্যসহ পাওয়া গেছে।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর 'Ketto' নামের একটি ক্রাউডফান্ডিং সংস্থা তাদের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে ছবি পোস্ট করা হয় যার ক্যাপশনে লেখা "My newborn baby, whose life hasn't even begun yet, is battling a deadly disease in the NICU"। এছাড়া কমেন্টে সাহায্যের আবেদন সংক্রান্ত একটি লিংকও পোস্ট করা হয়। দেখুন সেই পোস্টটি--
২২ অক্টোবর একই ক্রাউডফান্ডিং সংস্থা তাদের ফেসবুক ভেরিফায়েড পেজে শিশুটি এবং তার অবিভাবকের একটি ভিডিও আপলোড করে। যেখানে এক নারীকে তার অসুস্থ নবজাতকের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন করতে দেখা যায়। দেখুন--
পরবর্তীতে ক্রাউডফান্ডিং ওয়েবসাইট 'কিটো'তে শিশুটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। সেখানে বলা হয়, অসুস্থ শিশুটি হার্টের জটিলতায় ভুগছে। ওয়েবসাইটি শিশুটির রোগের বিবরণ, চিকিৎসাপত্র সহ প্রয়োজনীয় সব দলিল যুক্ত করা আছে। পাশাপাশি, এই সাহায্য গত ২৫ অক্টোবরের পর আর প্রয়োজন নেই বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ওয়েবসাইটে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অপরদিকে ফেসবুক পোস্টে দেয়া মোবাইল নম্বরগুলোতে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। আবার কোন মেডিকেলে ভর্তি আছে সে সম্পর্কিত কোনো তথ্য না থাকায় সায়মা নামের কোনো শিশুর জন্য সাহায্য প্রয়োজন কিনা তা সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ছবির শিশুটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সায়মা নয় বরং ভারতের অসুস্থ এক নবজাতকের।
অর্থাৎ ভারতের অসুস্থ শিশুর ছবিকে বাংলাদেশি বলে দাবি করে আর্থিক সাহায্য চাওয়া হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর ও প্রতারণামূলক।