সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, কতটুকু চাপ অনুভব করছেন তা ছবিটির দিকে তাকিয়ে আপনি পরিমাপ করতে পারবেন। দাবি করা হচ্ছে, যদি ছবি না নড়ে, আপনি শান্ত। আর যদি এটা ধীরে ধীরে চলে, আপনি একটু চাপে আছেন। যদি এটা দ্রুত চলে যায়, আপনি খুব ক্লান্ত । দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৫ মার্চ "Abdul Kaium" নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "এই ছবিটি একজন Japanese neuroscientist (স্নায়ুবিজ্ঞানী) তৈরি করেছেন। যদি ছবি না নড়ে, আপনি শান্ত । যদি এটা ধীরে ধীরে চলে, আপনি একটু চাপে আছেন । যদি এটা দ্রুত চলে যায়, আপনি খুব ক্লান্ত ।” স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি জাপানী কোনো স্নায়ুবিজ্ঞানীর নয়। বরং ইউক্রেনীয় একজন আর্টিস্ট ও ইলাস্ট্রেটরের আঁকা ছবি।
ছবিটি রিভার্স সার্চ করার পর, yuryfrom নামের একটি ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। এটি ইউরি পেরেপাডিয়া নামে ইউক্রেনীয় একজন আর্টিস্ট ও ইলাস্ট্রেটরের ব্যক্তিগত একাউন্ট।
ছবিটির বিবরণে শিল্পী নিজেই উল্লেখ করেছেন, ছবিটি তিনি এডোবি ইলাস্ট্রেটর ব্যবহার করে ২০১৬ সালে আকিওসি কিটাওকা (Akiyoshi Kitaoka) নামে একজন জাপানী অধ্যাপকের একটি অঙ্কন পদ্ধতি ব্যবহার করে তৈরী করেছেন, যাতে একজনের কাছে মনে হতে পারে চিত্রকর্মটি চলমান অবস্থায় আছে। এর সাথে জাপানি কোনো সাইকোথেরাপিস্টের কোনো সম্পর্ক নেই।
২০১৮ সালে বিবিসি থ্রিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউরি নিজেই কেউ কতটুকু চাপ অনুভব করছে, তার পরিমাপের ক্ষেত্রে এই ছবির সাথে কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে কপিরাইট লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে পোস্টগুলো অপসারণের দাবি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন বলেও জানান।
অর্থাৎ ছবিটি জাপানী কোনো স্নায়ুবিজ্ঞানীর নয় বরং ইউক্রেনীয় একজন আর্টিস্ট ও ইলাস্ট্রেটরের। পাশাপাশি এর সাথে মানসিক চাপ পরিমাপের কোনো সম্পর্ক নেই।
ছবিটি এর আগে বুম লাইভ, রয়টার্স, বাজফিড সহ একাধিক সংস্থা যাচাই করেছে।
সুতরাং ইউক্রেনীয় শিল্পীর আঁকা অপটিক্যাল ইলিউশানের ছবিকে জাপানী স্নায়ুবিজ্ঞানীর তৈরী মানসিক চাপ পরিমাপের ছবি দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।