সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ, গ্রুপ ও আইডি থেকে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে দুই যুবকের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মহড়া দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এরকম কয়েকটি ভিডিও দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৭ জানুয়ারি 'জাতীয়তাবাদী অনলাইন মিডিয়া' নামের একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "ডামি নির্বাচন অস্ত্র হাতে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সোনার ছেলেরা।" নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মহড়ার ঘটনাটি নির্বাচনের দিনে ভোটকেন্দ্র এলাকার নয় বরং ভিডিওটি কয়েক মাস আগের।
ভিডিওটির কি-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গত ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সালে অর্থাৎ নির্বাচনের প্রায় ৪ মাস আগে "কুমিল্লায় প্রকাশ্যে দুই যুবকের অস্ত্রবাজি; ভিডিও ভাইরাল" শিরোনামে যমুনা টেলিভিশনের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রতিবেদন পোস্ট করা হয়। যেই প্রতিবেদনের ভিডিওর সঙ্গে আলোচ্য ভিডিওটির হুবহু মিল পাওয়া যায়। অর্থাৎ ভিডিওটি আজকের বা ৭ জানুয়ারির হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ভিডিওটি দেখুন--
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, কুমিল্লার বরুড়ায় প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলার চেষ্টাকারী দুই যুবককে এখনও ধরতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয়রা বলছেন, তুচ্ছ ঘটনাতেও আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া চলে খোশবাস ইউনিয়নে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় উঠতি বয়সীরা জড়িয়ে পড়ছে নানান অপরাধে। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আতঙ্কে রয়েছেন বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ।
এছাড়াও, ভিডিওটি থেকে কি ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্সের মাধ্যমে 'Junayet Ahmed' নামের একটি আইডি থেকে "অস্ত্র হাতে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার খোশবাস স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে সোনার ছেলেরা অস্ত্র হাতে" ক্যাপশনে গত ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। যার সঙ্গে আলোচ্য দাবিতে পোস্ট করা ভিডিওটির হুবহু মিল রয়েছে। ভিডিওটি দেখুন--
এবারে নির্বাচনের দিনে (৭ জানুয়ারি, ২০২৪) দাবি করা আলোচ্য ভিডিওটি থেকে নেয়া স্ক্রিনশট (বামে) এবং যমুনা টেলিভিশনের প্রতিবেদন (৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ প্রকাশিত) থেকে নেয়া স্ক্রিনশটের (ডানে) তুলনা দেখুন--
অর্থাৎ গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিনে কুমিল্লার বরুড়ায় অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সেদিনের নয় বরং নির্বাচনের অন্তত ৪ মাস আগের ভিন্ন ঘটনার।
সুতরাং অস্ত্র হাতে মহড়া দেওয়ার পুরোনো ভিডিও নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রের দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।