সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একাধিক অখ্যাত অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে, একজন যুবকের কাঠমিস্ত্রির সহযোগী থেকে বিসিএস ক্যাডার হবার একটি খবর পোস্ট করা হচ্ছে। খবরটির সাথে যুবক এবং তার বৃদ্ধ পিতামাতার ছবিও যুক্ত করা হয়েছে। দেখুন এমন কিছু পোস্ট এখানে, এখানে, এবং এখানে।
গত ৩১ আগস্ট 'সকালের বার্তা' নামের ফেসবুক পেজ থেকে একটি অনলাইন পোর্টালের লিংক শেয়ার করে বলা হয় "কাঠমিস্ত্রির জোগালদার থেকে বিসিএস ক্যাডার"।
হুবহু একই শিরোনামে প্রকাশিত অনলাইন পোর্টালের ওই খবরটিতে প্রকাশের ডেটলাইন হিসাবে লেখা হয়েছে "৩১ আগস্ট ২০২১" এবং খবরটির বর্ণনায় 'শুক্রবার (৫ মে)" উল্লেখ করা আছে। স্বাভাবিকভাবে খবরটি সাম্প্রতিক মনে হচ্ছে।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, খবরটি সাম্প্রতিক নয়।
বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করার পর দেখা গেছে, অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত খবরটিও কপি করা। মূলত ২০১৭ সালের ৫ মে মূলধারার গণমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনে "কাঠমিস্ত্রির জোগালদার থেকে বিসিএস ক্যাডার" শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। বাংলা ট্রিবিউন-এ প্রকাশিত খবরে বলা হয়-
"কুড়িগ্রাম শহরের পলাশবাড়ির চকিদার পাড়ায় বাড়ি শফিকুলের। বিসিএস ক্যাডার হিসেবে চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর শুক্রবার (৫ মে) শফিকুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা হয় তার সঙ্গে। বাঁশের চাটাই আর পাটখড়ির বেড়ার জরাজীর্ণ ছোট দু'টি ঘরে জীবনযাপন শফিকুলের পরিবারের। রান্নাঘরে তখন রান্নায় ব্যস্ত শফিকুলের মা মোছা. ছোবেনা বেগম, বাবা আব্দুল খালেক ছেলের সঙ্গে বসে গল্প করছেন। সন্তান বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গৌরব তাদের চোখে-মুখে।"
বাংলা ট্রিউবিউনে প্রকাশিত উক্ত প্রতিবেদনটিকেই শিরোনাম সহ হুবহু কপি করে, কপিরাইট এড়াতে বাক্য ও শব্দের মাঝে অযাচিত যতি চিহ্ন ব্যবহার করে আলোচ্য অনলাইন পোর্টালগুলোতে নতুন খবর হিসেবে প্রকাশ করা হচ্ছে।
পাশাপাশি আলোচ্য অনলাইন পোর্টালে ফিচার হিসাবে ব্যবহৃত মূল ছবিটিও বাংলা ট্রিবিউনের প্রতিবেদনে খুঁজে পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, খবরটি ২০১৭ সালের মে মাসের ৫ তারিখ শুক্রবারের। ভিন্ন একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত ৪ বছর পুরনো এই খবরটিকেই হুবহু কপি করে, কোনো সূত্র উল্লেখ ছাড়াই নতুন ডেটলাইনে প্রকাশ করা হয়েছে।
সুতরাং এক সময়ে কাঠমিস্ত্রির সহযোগীর কাজ করা শফিকুল বিসিএস ক্যাডার হওয়ার ৪ বছর পুরোনো খবরকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে নতুন করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে; যা বিভ্রান্তিকর।