সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একাধিক পোস্টে দাবি করা হয় সম্প্রতি হিন্দু নাম ব্যবহার করে ঢাকার একটি মন্দিরে প্রবেশ করে হামলা চালায় 'রাশেদুল হাসান' নামে এক ব্যক্তি। দেখুন এমন দুটি পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৭ অক্টোবর 'গীতাপাঠ' নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে করা এক পোস্টে দাবি করা হয়, ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি মন্দিরে 'মিঠুন চক্রবর্তী' নাম পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ভিতরে প্রবেশ করে প্রতিমা ভাঙচুর করে। পরে জানা যায় তার আসল নাম 'রাশেদুল হাসান'। পরবর্তীতে মন্দিরের পুরোহিতের সহকারী ও পরিচ্ছন্নকর্মীরা তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। দেখুন সম্পূর্ণ পোস্টের স্ক্রিনশট--
উল্লেখ্য গত বুধবার অর্থাৎ ১৩ অক্টোবর থেকে কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কুরআন অবমাননার অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপ বা মন্দিরে হামলা ভাঙচুর, বিক্ষোভ ও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা কিংবা এর রেশ চলছে। এই প্রেক্ষাপটে এই পোস্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে, ঘটনাটি গত ১৭ অক্টোবর ফেসবুকে পোস্ট করার দিন সকাল সাতটার ঘটনা।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, হিন্দু নাম ব্যবহার করে মন্দিরে ঢুকে ভাঙচুর করার ঘটনাটি পুরোনো। ২০১৯ সালে ঘটনাটি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি অনলাইন গণমাধ্যম জাগোনিউজে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার শিরোনাম, 'মিরপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে যুবক আটক'। দেখুন--
জাগোনিউজের প্রতিবেদনটিতে মন্দিরে পুরোহিতের সহকারী অতিন্দ্র সরকারের বরাতে বলা হয়, "প্রথমে এই যুবক 'মিঠুন চক্রবর্তী' নামে নিজের পরিচয় দিলেও পরে সে জানায়, তার নাম রাশেদুল হাসান। মিরপুর ১১ নম্বর এভিনিউ এলাকায় তার বাসা। মিরপুর বিসিআইসি কলেজ থেকে গত বছর এইচএসসি পাস করেছে।"
একইদিনে খবরটি আরো কিছু গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন অনলাইন পত্রিকা সারাবাংলা'য় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি এখানে--
পড়ুন এখানে।
প্রতিবেদনে সারাবাংলা জানায়, অভিযুক্ত যুবক মিরপুর বাংলা স্কুল ও বিসিআইসি কলেজে পড়াশোনা করেছে। তার বাড়ি উত্তরবঙ্গে। তিনি ঢাকার মিরপুর বটতলা এলাকায় থাকেন।
এছাড়া সম্প্রচার মাধ্যম একাত্তর টিভিতেও খবরটি ভিডিও প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৯ সালে। দেখুন একাত্তর টিভির ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা সেই ভিডিও প্রতিবেদনটি এখানে--
২০১৯ সালের একই সময়ে হিন্দু ধর্মালম্বীদের একাধিক ফেসবুক পেজে সেই খবরটি পোস্ট করা হয়েছিল। দেখুন এরকম একটি পোস্ট--
অর্থাৎ ২০১৯ সালের ঢাকায় হিন্দু নাম ব্যবহার করে মুসলিম যুবকের মন্দিরে প্রবেশ করে ভাঙচুর করার পুরোনো একটি ঘটনা, চলমান দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।