সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি খবর শেয়ার করে বলা হচ্ছে, মুসলিমদের আচার আচরণে মুগ্ধ হয়ে বেলজিয়ামে ৯২ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করলেন এক বৃদ্ধা। দেখুন এমন কিছু পোস্ট এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১ অক্টোবর 'মুসলিম বুদ্ধিজীবি মহল✅' নামের ফেসবুক গ্রুপে একটি খবরের লিংক পোস্ট করে বলা হয়, "মুসলিমদের আচার আচরণে মুগ্ধ হয়ে বেলজিয়ামে ৯২ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করলেন এক বৃদ্ধা"। হুবহু একই শিরোনামে ২০২০ সালে প্রকাশিত খবরটির বিস্তারিত অংশে বলা হয়েছে, বেলজিয়ামের নাগরিক প্রবীণ নারী জর্জেট লেপল ৯২ বছর বয়সে ইসলাম গ্রহণ করেন। মুলত প্রতিবেশী মুহাম্মদ ও তার পরিবারের অনুপ্রেরণায় ইসলাম গ্রহণ করেন এই নারী। দেখুন সেই খবরের স্ক্রিনশট--
খবরটির বিস্তারিত অংশের স্ক্রিনশট--
আর্কাইভ দেখুন এখানে।
ফ্যাক্টচেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, জর্জেট লেপলের ইসলাম গ্রহণের খবরটি অনেক পুরোনো। বেলজিয়ামভিত্তিক একাধিক গণমাধ্যমে খবরটি ২০১২ এবং ১৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। ২০১২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর "nieuwsblad.be" নামক বেলজিয়ামের একটি স্থানীয় গণমাধ্যমে জর্জেট লেপলের ইসলাম গ্রহণের খবর প্রচারিত হয়েছিল। সেই খবরটির শিরোনাম ছিল, ''Allah heeft mijn gebeden verhoord' যার স্বয়ংক্রিয় গুগল অনুবাদ হচ্ছে, "আল্লাহ আমার প্রার্থনার উত্তর দিয়েছেন"। দেখুন--
২০১২ সালে প্রকাশিত এই খবরটিতে বলা হয়, ৯২ বছর বয়সী এই নারী ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন গত বছর অর্থাৎ ২০১১ সালে। খবরটির দাবিমতে, তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক নওমুসলিম। ক্যাথলিক খৃষ্টান ধর্মালম্বী জর্জেট লেপল মূলত তার প্রতিবেশি মুহাম্মদ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে আরো বিস্তারিত খোঁজে দেখা যায়, প্রবীন এই নওমুসলিম নারী জর্জেট লেপল ২০১৪ সালে মারা যান। উপরে উল্লেখিত বেলজিয়ামভিত্তিক সংবাদমাধ্যমেই ২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল লেপলের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছিল। দেখুন--
খবরটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে।
খবরটির গুগল স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ থেকে জানা যায়, ইসলাম গ্রহণের পর জর্জেট লেপল নতুনভাবে 'নুর' নাম গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে তার মুসলিম প্রতিবেশী মুহাম্মদের পরিবারের সাথে মরোক্কো চলে যান। তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করলে তার শেষ ইচ্ছানুসারে মরক্কোতে তাকে সমাহিত করা হয়।
তার মৃত্যু সংক্রান্ত আরেকটি খবর দেখুন বেলজিয়ামভিত্তিক অনলাইন 'sudinfo.be' তে। এটি প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল। দেখুন--
খবরটি পড়ুন এখানে।
অর্থাৎ ২০১১ সালে ওই বেলজিয়ান নারীর ইসলাম গ্রহণের পুরোনো খবর নতুন করে ২০২১ সালে প্রচার করা হচ্ছে, যিনি এরইমধ্যে ২০১৪ সালে মারা গেছেন। সুতরাং খবরটি বিভ্রান্তিকর।