সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পাবজি এবং ফ্রি ফায়ার খেলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক যুবক। ভিডিওটিতে এক তরুণকে একটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আঙুল দিয়ে বন্দুক দিয়ে গুলি ছোঁড়ার ভঙ্গি করতে দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১১ এপ্রিল 'গোলাম রাব্বী আকন্দ' নামের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "পাবজি- ফ্রী ফায়ার গেম এ আসক্ত ছেলেটির এই অবস্থা"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলি এমসিএইচ হাসপাতালের চিকিৎসকের দেয়া তথ্যমতে ভিডিওর কিশোর অসুস্থ নয় বরং ভান করছিল।
ভিডিওটি থেকে কি ফ্রেম কেটে রিভার্স সার্চ করার পর, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবিপি'র তামিল সংস্করণে ভিডিওটি সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনের স্বয়ংক্রিয় অনুবাদ থেকে কেবল জানা যায়, ভিডিওটি ভারতের তামিলনাড়ুর নেল্লাই জেলার নাঙ্গুনেরি এলাকার ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরের। হাসপাতালে রাতে ভর্তি হওয়ার পরদিন সকালেই কাউকে না জানিয়ে ওই কিশোর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
এর সূত্র ধরে সার্চ করার পর, ভারতের ইংরেজি সংবাদমাধ্যম 'টাইমস অব ইন্ডিয়া'-তে গত ৮ এপ্রিল "Video of boy not 'PUBG addiction', say doctors" প্রকাশিত এই ঘটনা সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ভিডিও কিশোরের হাসপাতালে ভর্তির সাথে পাবজি গেমের কোনও সম্পর্ক নেই। এমনকি কিশোরটি অসুস্থও ছিল না। ঐ কিশোরকে তামিলনাড়ুর যে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, সেই তিরুনেলভেলি এমসিএইচ হাসপাতালের ডিন ডা. এম রবিচন্দ্রনের বরাতে প্রতিবেদনে জানানো হয়, যদিও ছেলেটি অনেক বেশি মোবাইল ব্যবহার করত কিন্তু তার কোন আসক্তি ছিল না। মূলত পরিবার থেকে মোবাইল ব্যবহার করতে বন্ধ করতে বলায় সে ইচ্ছে করে তাদের মনোযোগ আকর্ষনের জন্য এমনটি ভান করছিল। পরদিন সকালেই কিশোরকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল বলেও জানান হাসপাতালের ডিন। প্রতিবেদনের স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভিডিওতে দেখতে পাওয়া কিশোর পাবজি সংক্রান্ত কোনো রোগে আক্রান্ত হয়নি বরং সে ভান করছিল।
সুতরাং ভারতের তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলির এক কিশোরের ভিডিওকে বিভ্রান্তিকর দাবি জুড়ে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।