সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে ইউক্রেন-রাশিয়ার সামরিক সংঘাতের প্রেক্ষিতে একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে এটি চলমান যুদ্ধে যাওয়ার আগে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রেমিকার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার মুহুর্তের দৃশ্য। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
যেমন গত ২৮ ফেব্রুয়ারি 'Shoyon Datta' নামে একটি আইডি থেকে ভিডিও ক্লিপটি আপলোড করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "যুদ্ধ বোঝে না প্রেম! অথচ রাশিয়ার বিরুদ্ধে সেই 'যুদ্ধে' যাওয়ার আগে যুগলবন্দী প্রেমিক প্রেমিকাদের আলিঙ্গন ইউক্রেনের ফৌজিদের। কেউই জানেন না, হয়তো এটাই শেষ আলিঙ্গন, শেষ দেখা। তবুও ভালোবাসা থাকুক তাদের অন্তরে, জয় হোক ভালবাসার ❤️❤️ । (ভিডিয়ো সৌজন্যে টুইটার)"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টটের বর্ণনায় করা দাবিটি বিভ্রান্তিকর। ২০১৪ সালের রুশ-ইউক্রেন সংঘাতের উপর নির্মিত একটি ডকুমেন্টারির ছোট একটি দৃশ্য এটি।
কী-ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে, ভিডিওটির একটি দৃশ্য চেক প্রজাতন্ত্র ডকুমেন্টারি ফিল্ম ইন্সটিটিউটের ওয়েবসাইটে খুঁজে পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটে দৃশ্যগুলো 'The War of Chimeras' নামের ফিল্মের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এই সুত্রধরে সার্চ করার পর, ইউটিউবে 'UATV English' নামে চ্যানেল "The War of Chimeras: Story of Love, Life and Death" শিরোনামে ২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আপলোড করা একটি তথ্যচিত্রেও আলোচ্য দৃশটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওর বিবরণ থেকে জানা যায়, ইউক্রেনের দোনবাস যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বানানো একটি তথ্যচিত্রের দৃশ্য এটি। ভিডিওতে নির্মাতার সাক্ষাৎকারও দেখতে পাওয়া যায়।
বিস্তারিত জানতে সার্চ করার পর, ইন্টারনেট মুভি ডাটাবেজে (IMDb) 'The War of Chimeras' নামের তথ্যচিত্রটির বিষয়বস্তুর উপর একটি নিবন্ধ পাওয়া গেছে। সেখানে বলা হয়, তথ্যচিত্রটি ২০১৪ সালে রাশিয়া কর্তৃক ক্রিমিয়া অধিকার পরবর্তী সংঘাতের সময় এর সহ-পরিচালক অ্যানাস্তাসিয়া স্টারোজিকায়া এবং তার প্রেমিক ইউক্রেনীয় সৈনিকের গল্পকে কেন্দ্র করে নির্মিত।
ভিডিওটির সম্পূর্ণ ভার্সন গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে যেখানে ভাইরাল ক্লিপটি ২ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড থেকে ৩ মিনিট ৬ সেকেন্ড পর্যন্ত সময়ে দেখতে পাওয়া যায়। দেখুন--
সুতরাং, 'War of Chimeras' নামে একটি তথ্যচিত্রের দৃশ্যকে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়কার ঘটনা দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।