কালের আলো নামক একটি পোর্টালের খবরের শিরোনামে "নোবেল পাচ্ছেন বাংলাদেশি-মার্কিনি ড. রুহুল আবিদ" দাবি করা হলেও প্রতিবেদনের ভেতরে 'নোবেল পাচ্ছেন' তেমন কোনো তথ্য নেই। বরং রয়েছে রুহুল আবিদের নাম প্রস্তাব করার খবর।
প্রতিবেদনের ভেতরের খবরে লেখা হয়েছে, ''মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের আলপার্ট মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক ড. রুহুল আবিদ এবং তার অলাভজনক সংস্থা হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ফর অল (হায়েফা) নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
ম্যাসাচুসেটস বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জিন-ফিলিপ বেলিউ এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
২০২০ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত ২১১ ব্যক্তির মধ্যে ড. আবিদ একজন।''
ফ্যাক্ট চেক:
ডা. আবিদের নোবেল পাওয়ার খবরটি এখনো নিশ্চিত নয়। এটি কেবল প্রাথমিক মনোনয়ন। ২০২০ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য এরকম ২১১ জন ব্যক্তি ও ১০৭ টি সংস্থাকে এখন পর্যন্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। আসছে অক্টোবরে চূড়ান্ত বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে। নোবেল পুরস্কারের অফিসিয়াল
ওয়েবসাইটে দেখুন
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য। নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা প্রায় এক বছরব্যাপী একটি প্রক্রিয়া। নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এই পুরস্কারের বিজয়ী চূড়ান্ত করার কাজে নিয়োজিত যা নরওয়ের পার্লামেন্ট (স্টর্টিং) কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন সদস্যের দ্বারা গঠিত।
নোবেল ফাউন্ডেশনের দ্বারা সংজ্ঞায়িত ব্যক্তিবর্গই কেবল নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য কারো নাম প্রস্তাব করতে পারেন। এর মধ্যে রয়েছেন,
-বিভিন্ন দেশের সরকারের ও সংসদের সদস্য,
-আন্তর্জাতিক আদালতের সদস্য,
-বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর ও সামাজিক বিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন, আইন ও ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক, শান্তি ও পররাষ্ট্রনীতি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক,
-সাবেক নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী,
-নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া কোন সংগঠনের বোর্ড সদস্য,
-নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির বর্তমান কিংবা পুরনো কোন সদস্য,
-নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটির সাবেক কোন উপদেষ্টা।
উল্লেখিত ব্যক্তিরা যোগ্য মনে করেন এমন যে কারো নাম তারা পুরস্কারটির জন্য প্রস্তাব করতে পারেন। তবে কেউ নিজে নিজের নাম প্রস্তাব করতে পারবেন না। এই নাম প্রস্তাব বা মনোনয়নকে 'নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেয়ার জন্য মনোনীত' মনে করাটা ভুল ধারণা।
এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পাদন করতে এক বছরেরও বেশী সময় লেগে যায়। এই নিয়মেই
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে মনোনয়ন নেয়া শুরু হয়েছে যার সমাপ্তি হবে ২০
২০ সালের অক্টোবরে শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষনার মধ্য দিয়ে। এর মাঝখানে আরো তিনটি ধাপ আছে: ফেব্রুয়ারীতে মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ সময়, মার্চ থেকে মে এর মধ্যে এই তালিকা হতে সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয় এবং জুন থেকে আগস্টের মধ্যে উপদেষ্টাদের মতামত নেয়া হয়।
চূড়ান্ত বিজয়ী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এখনি কেউ নোবেল পাচ্ছেন এরকম শিরোনাম বিভ্রান্তিকর।