সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ফটোকার্ড পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, জাল নোটসহ বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর এক নেতা পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৪ জানুয়ারি ‘M Billah’ নামের একটি আইডি থেকে পোস্ট করে উল্লেখ করা হয়, “জাল নোট সহ জামাত নেতা গ্রেফতার।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় জাল নোটসহ পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তি একটি মসজিদের ইমাম বলে গণমাধ্যমের খবরে পাওয়া গেছে। তবে তিনি জামায়াত নেতা এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ফেসবুকে প্রচারিত ভাইরাল দাবির পক্ষে কোনো ধরণের প্রতিবেদন বা তথ্য পাওয়া যায়নি।
তবে, কি ওয়ার্ড সার্চ করে “মেঘনায় জাল নোটসহ মসজিদের ইমাম গ্রেপ্তার” শিরোনামে ‘ভোরের কাগজ’ পত্রিকার অনলাইনে একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে প্রকাশিত ছবিটির সঙ্গে ফেসবুকের প্রচারিত ভাইরাল ফটোকার্ডের ছবির সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ২৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় ১ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকার জাল নোটসহ মসজিদের এক ইমামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার বৈদ্যনাথপুর সিবনগর বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ইমাম মাওলানা মো. মিজান (৩২) পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানার তাহেরপুর গ্রামের মো. রুস্তম আলী হাওলাদারের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মেঘনার চ্যাংগাকান্দি জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।” স্ক্রিনশট দেখুন--
একই সার্চে “জাল নোটসহ মসজিদের ইমাম গ্রেপ্তার” শিরোনামে দৈনিক সংবাদপত্র ‘জনকণ্ঠ’ পত্রিকায় আরেকটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। যেই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবিটির ব্যক্তির সঙ্গে ভাইরাল ফটোকার্ডের ব্যক্তিটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ২৮ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, “বৈদ্যনাথপুর সিবনগর বাজারে কয়েকটি জাল নোট দিয়ে লেনদেন করার চেষ্টা করছিলেন মাওলানা মো. মিজান (৩২)। এ সময় মেঘনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইমুম আহমেদ বিষয়টি লক্ষ্য করেন। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি স্বীকার করেন, তার কাছে আরও জাল নোট রয়েছে। পরবর্তীতে জুম্মা নামাজের পর মসজিদের ভেতরে থাকা তার কক্ষ তল্লাশি করে পুলিশ ৫০০ টাকার ২২১টি জাল নোট উদ্ধার করে, যার মোট মূল্য ১ লাখ ১০ হাজার ৫০০ টাকা। একজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক স্থানীয়রা। তারা বলছেন, ইমামতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা অত্যন্ত দুঃখজনক।” স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য প্রতিবেদন দুটির কোথাও আটককৃত ইমামের সঙ্গে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সংশ্লিষ্টতার তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
নিচে ফেসবুকে ভাইরাল দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড (বামে) এবং ভোরের কাগজ পত্রিকায় প্রকাশিত ছবির (ডানে) মধ্যে মিল দেখুন পাশাপাশি--
অর্থাৎ জাল নোটসহ পুলিশের হাতে আটক ব্যক্তি জামায়াতের কোনো নেতা নন বরং তিনি কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার একটি মসজিদের ইমাম।
সুতরাং জাল নোটসহ মসজিদের ইমাম আটকের ছবি জামায়াত নেতার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।