সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থ্রেডস-এর একাধিক একাউন্ট থেকে একটি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুবরণ করেছেন। এরকম দুটি পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
গত ২৪ জুলাই 'sohelkhan5429' নামের একটি একাউন্ট থেকে পোস্ট করে লেখা হয়, "বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ইন্তেকাল করেছেন ইন্নালিল্লাহি ওয়া লিল্লাহি রাজিউন।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। কোনো ধরণের তথ্যসূত্র ছাড়াই বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। বেগম জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থা আগের মতোই আছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কি-ওয়ার্ড সার্চ করে বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া সেল-এ আলোচ্য দাবির পক্ষে কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু হলে স্বাভাবিকভাবেই দেশের গণমাধ্যমে তা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হওয়ার কথা। যদিও এ ব্যাপারে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তবে তাঁর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। গত ২৫ জুলাই "খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল, বাসায় ফেরার সিদ্ধান্ত হয়নি" শিরোনামে দৈনিক ‘কালবেলা’র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি এখন কেবিনে রয়েছেন। গত সতের দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও এখন পর্যন্ত তার বাসায় ফেরার সিদ্ধান্ত হয়নি। কবে নাগাদ তিনি হাসপাতাল থেকে ছুটি পাবেন, সে ব্যাপারে তার মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরটি গুজব বলেও একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। "খালেদা জিয়াকে নিয়ে গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ" শিরোনামে গত ২৪ জুলাই প্রকাশিত 'ঢাকা ট্রিবিউনের' একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, "হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।" স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়াও এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বুম বাংলাদেশকে বলেন, "বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন আগের মতোই স্থিতিশিল অবস্থায় আছেন। বিরোধী পক্ষের লোকেরা তাঁকে নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।"
অর্থাৎ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কিছু শারীরিক জটিলতার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রসঙ্গত খালেদা জিয়ার লিভা সিরোসিস জটিলতার কারণে ফুসফুসে পানি জমা ও রক্তক্ষরণ জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জিয়া ওয়ারফ্যানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালে তাকে সাজা দেওয়া হয়। পরে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে গুলশানের বাসায় অবস্থান করার অনুমতি দেয় সরকার।
সুতরাং বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মারা গেছেন দাবিতে সামাজিক মাধ্যম থ্রেডসে পোস্ট করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।