সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুবরণ করেছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১২ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টি বিএনপি নামের একটি পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে সেখানে লেখা হয়, "আর বাঁচানো গেলো না খালেদা জিয়াকে ইন্নালিল্লাহ বিএনপির শোকের ছায়া সারাদেশে কান্নাকাটি শুরু।" এছাড়াও ওই ভিডিওতে একজন উপস্থাপিকাকে বলতে শোনা যায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মারা গেছেন। সকাল সোয়া সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। কোনো ধরণের তথ্যসূত্র ছাড়াই খবরের বিভিন্ন অংশ এডিট করে বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে, খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে বুম বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন।
কি ওয়ার্ড সার্চ করে বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও মিডিয়া সেল-এ এ ধরণের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশের অন্যতম শীর্ষ রাজনৈতিক দলের প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু হলে স্বাভাবিকভাবেই দেশের গণমাধ্যমে তা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রকাশিত হওয়ার কথা। যদিও এ ব্যাপারে কি-ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে জাতীয় গণমাধ্যমে কোনো প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। গত ১১ ডিসেম্বর "সিসিইউতে বেগম খালেদা জিয়া" শিরোনামে এনটিভি অনলাইনের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কেবিন থেকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে। তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১২৫ দিন ধরে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্ক্রিনশট দেখুন--
এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ড. অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান বুম বাংলাদেশকে বলেন, "বিএনপির চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সিসিইউ থেকে কেবিনে নেওয়া হয়েছে। তিনি এখন ভালো আছেন। বিরোধী দলের লোকেরা তাঁকে নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।"
অর্থাৎ, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, খালেদা জিয়ার লিভা সিরোসিস জটিলতার কারণে ফুসফুসে পানি জমা ও রক্তক্ষরণ জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জিয়া ওয়ারফ্যানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালে তাকে সাজা দেওয়া হয়। পরে তাঁর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে গুলশানের বাসায় অবস্থান করার অনুমতি দেয় সরকার।
সুতরাং বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মারা গেছেন দাবিতে বিভিন্ন ভিডিও ফেসবুকে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।