সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উক্তি দাবি করে একটি পোস্টে বলা হচ্ছে, ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়া, ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে পুতিন এমন বক্তব্য দিয়েছেন । এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এবং এখানে।
যেমন গত ৩ মার্চ 'Emrul Kausar Emon Travel Blog's' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে লেখা হয়েছে, "পুতিন এর ভাষণ,, আমি ইউক্রেনের জনসাধারণের কান্না দেখে মোটেও বিচলিত নই। কারণ আমি ফিলিস্তিন, ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, লিবিয়ান বৃদ্ধ নারী শিশুদের বিবস্ত্র কান্না দেখে দেখেই বড় হয়েছি। ধিক্কার জানাই ইউরোপ তথা পশ্চিমা বিশ্বকে তখন কোথায় ছিলো তাদের মানবিক নিষেধাজ্ঞা।_______পুতিন" । স্ক্রিনশটে দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি ভিত্তিহীন। একাধিক সূত্র ধরে অনুসন্ধান করার পরও পুতিনের দেয়া এর ধরণের কোন বক্তব্য বা মন্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ভাইরাল ফেসবুক পোস্টটি সূত্রহীন। অর্থাৎ দাবির পক্ষে কোন তথ্যসূত্র উল্লেখ নেই। একাধিক কি-ওয়ার্ড ধরে এবং ভাষা পরিবর্তন করে সার্চ করার পরও এমন কোনো বক্তব্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফলে ধারণা করা যায়না এমন মন্তব্য পুতিন কোথায় কিংবা কবে করেছেন। পাশাপাশি, সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতির পর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যুদ্ধ সংক্রান্ত সকল গুরুত্বপূর্ন মন্তব্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বা স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খবর হয়েছে। কিন্তু পুতিনের বলে দাবিকৃত বক্তব্যটি কোন সূত্রেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
বরং ভাইরাল পোস্টের বক্তব্য ইংরেজিতে রূপান্তর করার পর ইংরেজি সংবাদমাধ্যম ঢাকা ট্রিবিউনের একটি নিবন্ধ হুবহু উক্তিটি খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে উক্তিটিকে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্তিটি যে ফেসবুকে জনৈক ব্যবহারকারীর তারও প্রমাণ পেয়েছে বুম বাংলাদেশ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার রাশিয়ার সেনাবাহিনী ইউক্রেনের সামরিক অভিযান শুরু করার দিনই উক্তিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পরে। তৎকালে কোথাও উক্তিটি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের বলে দাবি করা হয়নি। পরে এই মন্তব্যটিই বিভিন্ন ফেসবুক প্রোফাইলে কপি হয়ে এক সময় পুতিনের নাম জুড়ে হয়ে প্রচার হতে থাকে। ২৪ ফেব্রুয়ারি করা একটি পোস্টের স্ক্রিনশট দেখুন--
সুতরাং, এটি স্পষ্ট যে ফেসবুকে জনৈক ব্যবহারকারীর মন্তব্যকে তথ্য-প্রমাণহীনভাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।