সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে যুদ্ধযান ট্যাংকের ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি ইরাকে আগ্রাসনে ব্যবহৃত ইউক্রেনীয় ট্যাংকের। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি 'Sheikh Sajeed' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয় "পাপ বাপকেও ছাড়ে না যদিও যুদ্ধের বিপক্ষে তারপর ও স্বরন করতে মনে চাচ্ছে মিথ্যা আযুহাত দিয়ে ইরাকে হামলা চালাতে আমেরিকার সংগী হয়ে এসেছিল, হত্যা করেছিল সাধারণ মানুষকে, আজকে তাদেরকে মারতে রাশিয়া হাজির ছবিতে ইউক্রেনের ট্যাংক ইরাকে হামলায়" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি এডিট করা। ২০০৩-২০০৮ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ইরাকে নিযুক্ত থাকলেও ভাইরাল ছবিটি এই সময়কার নয় বরং ১৯৯০ সালে ইরাক কর্তৃক কুয়েত দখলের ঘটনায় শুরু হওয়া উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ধারণ করা যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর ট্যাংকের ছবি এটি।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ইরাকের কুয়েত আক্রমণ বিষয়ক ২০১৩ সালের ১২ সেপ্টেম্বর আরব অঞ্চলভিত্তিক আল বাওয়াবা নামক সংবাদমাধ্যমে, "The price of the past: Iraq reiterates commitment to pay Kuwait compensations" শিরোনামে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে মূল ছবিটি খুঁজে পাওয়া গেছে। মূল ছবিতে ইউক্রেনের পতাকা ও সেনাবাহিনীর প্রতীকের ছবি কোনোটিই নেই। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ভাইরাল পোস্টের ছবিটি এডিট করে ইউক্রেনের পতাকা ও সেনাবাহিনীর প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে। আল বাওয়াবা'র প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ধারণ করা ছবি এটি, যেখানে ইরাকের তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ইরাক কুয়েত দখল করে নেয়।
কীওয়ার্ড ধরে সার্চ করে, ছবি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গেটি ইমেজে-এর ওয়েবসাইটে ১৯৯১ সালে ইরাক-কুয়েত সীমান্তে আলোচ্য ছবিতে দৃশ্যমান ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের একই ম্যুরালের সামনে আমেরিকান সৈন্যদের তোলা ছবিটি পাওয়া গেছে।
অর্থাৎ ছবিগুলো ২০০৩ সালে আমেরিকা কর্তৃক ইরাক হামলার এক যুগেরও বেশি আগে উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় তোলা। প্রসঙ্গত ২০০৩-২০০৮ পর্যন্ত ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ইরাকে নিযুক্ত ছিল।
সুতরাং উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় ইরাক-কুয়েত সীমান্তবর্তী এলাকায় মার্কিন সেনাদের ট্যাংকসহ অবস্থানের ছবিকে এডিট করে ইউক্রেনের পতাকা বসিয়ে ছবিটিকে ইরাক আগ্রাসনে ব্যবহৃত ইউক্রেনীয় ট্যাংকের বলে দাবি করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।