সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে হরিণ সদৃশ একটি প্রাণী ও কুমিরের লড়াইয়ের ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, আক্রমণ করার পর হরিণীটি গর্ভবতী টের পেয়ে এটিকে ছেড়ে দিয়েছে হিংস্র কুমির। এমন কিছু পোস্টের লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৯ নভেম্বর 'Ashok Tanu' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিও ফুটেজটি শেয়ার করে লেখা হয়, "আক্রান্ত হরিণ টি গর্ভবতী ছিল।। শিকারের সময়ে হরিণটির পেটে শাবক দের নড়াচড়া দেখে কুমির টি তার হরিণ শিকার টি কে ছেড়ে দেয় 🦌🐊 এদের থেকে মানব জাতির অনেক শিক্ষা নেওয়া উচিত"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, পোস্টে ভিডিওটির বর্ণনায় জুড়ে দেয়া গল্পটি ভিত্তিহীন। উক্ত ভিডিওটির ধারণকারীর বক্তব্য নিয়ে গণমাধ্যমের করা প্রতিবেদনে জানা গেছে, মূলত ইম্পালাটিকে কাবু করতে ব্যর্থ হয়ে কুমির এটিকে ছেড়ে দেয়।
ভিডিওটি থেকে কী ফ্রেম কেটে রিভার্স ও কী ওয়ার্ড ধরে সার্চ করার পর, ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইলে ভিডিওটি সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়, যা ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ভিডিওটি আফ্রিকার দেশ নামিবিয়ার এতোশা জাতীয় উদ্যানের। ভিডিওর প্রাণীটি ইম্পালা। ইম্পালা একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী যা হরিণের মতো দেখতে। এটি Artiodactyla পর্বের Bovidae পরিবারের প্রাণী। স্ক্রিনশট দেখুন--
আলোচ্য ভিডিওটির ধারণকারীর বরাতে এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বন্য কুকুরের তাড়া খেয়ে ইম্পালাটি কুমিরের মুখে পড়ে। কিন্তু ইম্পালাটিকে কাবু করতে ব্যর্থ হয়ে শেষতক এটিকে ছেড়ে দেয় কুমির। ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন থেকে নেয়া স্ক্রিনশট দেখুন--
এছাড়া একাধিকবার সার্চ করেও ইম্পালাটির পেটে বাচ্চা ছিল বা ফেসবুক প্রচারিত গল্পটিকে সমর্থন করে এমন কোনো তথ্য নির্ভরযোগ্য কোনো সূত্রেই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
অর্থাৎ ফেসবুকে ভিডিওর সাথে জুড়ে দেয়া কাহিনীটি মনগড়া।
সুতরাং ইম্পালা কুমিরের লড়াইয়ের ভিডিওর সাথে মনগড়া কাহিনী প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।