সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে শিশুদের সারিবদ্ধ লাশের ছবি পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ছবিটি ফিলিস্তিনের শিশুদের যারা ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে। এরকম একটি পোস্ট দেখুন এখানে।
গত ১৪ অক্টোবর 'আবু হেনা ইদ্রিস' নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, "ভিতুরাই বার বার মরে আর সহসীরই একবার মরে! ইজরায়েলের গণহত্যার দায়ভার কে নেবে? ফিলিস্তানের হামাসের সৈন্যকে হত্যা করার নামে তারা হাজার হাজার নিরীহ শিশু ও মহিলা ও যুবক ছেলেদেরকে নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছে। এ গণহত্যার বিচার একদিন আল্লাহর দরবারে হবেই হবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে ইসরাইলের উপর গজব নাযিল হোক ,ইজরায়েলের ধ্বংস হোক। Who will take responsibility for Israel's genocide? They are indiscriminately killing thousands of innocent children, women and young men in the name of killing Hamas soldiers in Palestine. This genocide will be judged one day in the court of God. May the wrath of God descend on Israel, may Israel be destroyed."। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ পোস্টে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটিতে দৃশ্যমান নিহত শিশুরা ফিলিস্তিনের, যাদের মৃত্যু হয়েছে ইসরায়েলি হামলায়।
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, দাবিটি সঠিক নয়। ছবিটি ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনের শিশুদের নয় বরং এটি ২০১৩ সালে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলায় মারা যাওয়া শিশুদের ছবি।
আলোচ্য ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ফটোস্টকার এলামিতে আলোচ্য ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়। ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়, "Dead children lie on the ground as Syrian rebels claim they were killed in a toxic gas attack by pro-government forces in eastern Ghouta, on the outskirts of Damascus in Syria on August 21, 2013. The Syrian government has denied the claims from the opposition that it has used chemical weapons." (বঙ্গানুবাদ: মৃত শিশুদের শুইয়ে রাখা হয়েছে। সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, ওই শিশুরা ২০১৩ সালের ২১ আগস্ট সিরিয়ার দামেস্কের উপকণ্ঠে পূর্ব ঘৌটায় সরকারি বাহিনীর বিষাক্ত গ্যাস হামলায় নিহত হয়। তবে বিরোধীদের এমন দাবি অস্বীকার করেছে সিরিয়ার সরকার।)। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো সার্চ করে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক এর ওয়েবসাইটে ২০১৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর "How Syria's Chemical Weapons Could Be Disposed Of" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই বছরের ২১ আগস্ট সিরিয়ার দামেস্কের উপকণ্ঠের শিশুরা রাসায়নিক অস্ত্রের বিষক্রিয়ার সংস্পর্শে আসার সাথে সাথেই মারা যায়। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ ২০১৩ সালের ২১ আগস্ট সিরিয়ার দামেস্ক শহরের পাশে ঘৌটা এলাকায় রাসায়নিক হামলার ঘটনা ঘটে। আলোচ্য ছবিটি ওই রাসায়নিক হামলায় মৃত শিশুদের।
সুতরাং ১০ বছর আগে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলায় নিহত শিশুদের ছবি পোস্ট করে এটি সম্প্রতি ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি শিশুদের বলে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।