সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে একটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ভোলার চরফ্যাশন থেকে তোলা। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ভাঙা ঘরে কাদামাটিতে মা তার সন্তানকে আগলে রেখেছেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৮ মে 'মোঃ মেহেদী হাসান' নামের একটি আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে বলা হয়, "পৃথিবীতে সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয় এর জায়গা হচ্ছে মায়ের কোল। গতকাল ২৭/০৫/২০২৪ ভোলার চরফ্যাসনের দৃশ্য৷ এক মা তার সন্তান কে বাঁচানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। এটাই মা।” নিচে পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য ছবিটি বাস্তবিক নয়। ছবিটি সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত কোনো মানুষের নয় বরং এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
ছবিটির রিভার্স ইমেজ সার্চ করে গ্রহণযোগ্য কোনো মাধ্যমে দাবি অনুযায়ী ছবিটির বাস্তব হওয়ার বিষয়ে কিংবা ছবির বিষয়েও উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে বাস্তব ছবির বৈশিষ্ট্যের সাথে সাংঘর্ষিক ও এআই ব্যবহার করে তৈরি করা ছবির কিছু বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়।
আলোচ্য ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখা যায়। যেমন ছবিতে নারীর হাতের আঙুল ৪টি এবং পায়ে আঙুল ৬টি। সাধারণত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ছবিতে এ ধরনের অসঙ্গতি থাকে। স্ক্রিনশট দেখুন--
এদিকে এআই ছবি শনাক্তের টুলস 'হাইভ' ব্যবহার করে ছবিটি যাচাই করা হয়। টুলসটি ছবিটিকেই সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। ছবির ফলাফলের স্ক্রিনশট দেখুন--
পাশাপাশি, এআই ছবি শনাক্তের আরেক টুলস 'এআই অর নট' ব্যবহার করে ছবিটি যাচাই করা হয়। টুলসটি ছবিটিকেই সম্ভাব্য এআই দ্বারা তৈরি ছবি হিসেবে ফলাফল প্রদান করেছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ছবিটি ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত ভোলার চরফ্যাশনের কারো নয় বরং এটি এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং এআই প্রযুক্তিতে তৈরি ছবিকে বাস্তবিক ছবি হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে; যা বিভ্রান্তিকর।