সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন নতুন জোটের দুই মিত্র শাহবাজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ) এবং পাকিস্তান জমিয়তে উলামা-ই-ইসলাম (এফ)-এর মধ্যে মারামারির দৃশ্য এটি। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ১৩ এপ্রিল 'এম ডি আশরাফুল' নামের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয়, "প্রথম দিনেই #Pakistan নতুন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের গ্রুপ আর মাওলানা ফজলু গ্রুপের মধ্যে মারামারি। পাকিস্তানকে কখনোই সাপোর্ট করিনা, কিন্তু মুসলিম লিডার হিসেবে ইমরান খান কে সাপোর্ট করি।"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ক্যাপশনে করা দাবিটি সঠিক নয়। পাকিস্তান সরকারের মিত্রদের অন্তঃকলহ নয়, বরং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কয়েকজন নেতাকর্মীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ভিডিও এটি।
ভিডিওটি থেকে কি ফ্রেম কেটে রিভার্স সার্চ করার পর, টুইটারে হুবহু ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। টুইটার ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা আছে, " Mustafa Nawaz Khokhar and Noor Alam got angry when their voices were shouted and insulted while breaking the fast."। টুইটটি দেখুন--
এই সূত্র ধরে সার্চ করার পর, হাতাহাতির ঘটনার ভিডিওটি-সহ পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডনে গত ১২ এপ্রিল "PTI dissident Noor Alam and PPP leaders involved in fight with elderly at hotel in Islamabad" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, পাকিস্তানের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআই'য়ের বিদ্রোহী জাতীয় পরিষদ সদস্য (এমএনএ) নুর আলম খান ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) নেতা পিপিপি নেতা মুস্তফা নওয়াজ খোখার, নাদিম আফজাল খানের সাথে বসে ইফতার করছিলেন। এই সময় পিটিআই'য়ের অন্য এক কর্মী নুর আলম খানের উপর মারমুখী হলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। প্রসঙ্গত, ইমরানের নিজ দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের যেসব সদস্য ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল তাদের মধ্যে নুর আলম খান অন্যতম। প্রতিবেদনটির স্ক্রিনশট দেখুন--
অর্থাৎ পাকিস্তান সরকারের নতুন মিত্রদের অন্তঃকলহ নয় বরং পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের কর্মীদের মধ্যে এই হাতাহাতির ঘটনাটি ঘটে।
ভিডিওটি দ্য ডনের ইন্সটাগ্রাম একাউন্টেও একই বিবরণ সহ পোস্ট করতে দেখা গেছে।
সুতরাং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের বিদ্রোহী এক সাংসদের সাথে তারই দলের নেতাকর্মীদের হাতাহাতির ভিডিওকে পাকিস্তানের নতুন জোট সরকারের মিত্রদের অন্তঃকলহ বলে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।