সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি ও পেজ থেকে আকাশে বিধ্বস্ত হয়ে একটি পড়ন্ত হেলিকপ্টারের ভিডিও পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, এটি সদ্যপ্রয়াত ভারতের প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী হেলিকপ্টারের ভিডিও। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত ৯ ডিসেম্বর 'ব্রেকিং' নামের ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে লেখা হয় "হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান বিপিন রাওয়াত মারা গেছেন। বুধবার তামিলনাড়ুর কন্নড়ে একটি দুর্গম পাহাড়ের জঙ্গলে ভূপতিত হওয়া হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ১৪ জনের মধ্যে ১৩ জন মারা গেছেন। নিহতদের মধ্যে আছেন বিপিন রাওয়াতের স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতও" স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ভিডিওটি জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী হেলিকপ্টারের নয় বরং ২০২০ সালে সিরিয়ার ইদলিবে বিদ্রোহীদের গুলিতে বিধ্বস্ত হওয়া সিরিয়ান সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারের ভিডিও এটি।
ভিডিওটির কি-ফ্রেম কেটে রিভার্স ইমেজ পদ্ধতিতে সার্চ করলে, ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল Sky News এর অনলাইনে ২০২০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদনে ক্লিপটি খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, বিধ্বস্ত হওয়া হেলিকপ্টারটি সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর, যেটি সিরিয়ার ইদলিব শহরের কাছে বিদ্রোহীদের গুলিতে ভূপাতিত হয়। স্ক্রিনশট দেখুন--
এর সূত্রধরে সার্চ করার পর, ব্রিটেনের গণমাধ্যম 'দ্য টেলিগ্রাফ' এর ইউটিউব চ্যানেলেও একইদিনে আপলোড করা আলোচ্য ভিডিওটির অন্য একটি ভার্সন খুঁজে পাওয়া গেছে। ইউটিউব ভিডিওটির শিরোনাম ও বর্ণনা থেকে জানা যায়, ধারণা করা হচ্ছে তুরস্কের সাহায্যকৃত অস্ত্রের মাধ্যমে ইদলিবের বিদ্রোহীরা সিরিয় বিমান বাহিনীর এই বিমানটি ভূপাতিত করেছিল। দেখুন ভিডিওটি--
অর্থাৎ ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয় এবং জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনারও নয়।
প্রসঙ্গত গত ৮ ডিসেম্বর ভারতীয় রাজ্য তামিলনাড়ুর নীলগিরি হিলস এলাকায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ভারতের প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও তাঁর স্ত্রীসহ হেলিকপ্টারে থাকা আরও ১১ আরোহী নিহত হন।
ভিডিওটি ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা বুম লাইভ আগেই যাচাই করেছে।
সুতরাং ২০২০ সালে সিরিয়ায় ইদলিবে বিদ্রোহীদের হামলায় ভূপাতিত সিরিয়ান বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের ভিডিওকে সদ্যপ্রয়াত ভারতের প্রতিরক্ষাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে বহনকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।