সামাজিক মধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও প্রচার করে বলা হচ্ছে, ভারতে শেখ হাসিনার ওই সাক্ষাৎকারটি ধারণ করা হয়েছে এবং তিনি দ্রুতই দেশে ফিরবেন। এরকম কয়েকটি পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৯ নভেম্বর 'মোঃ জসিম মিয়া' নামে একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, "ভারতে শেখ হাসিনার ইন্টারভিউ, ইনশাআল্লাহ খুব শীগ্রই দেশে ফিরবেন।" ভিডিওটিতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, "জনগণের কাছে আমার আহ্বান থাকবে যে কোনো অন্যায় অবিচার হলে আমি জনগণের কাছেই বিচার চাইবো"। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওটি শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক কোনো সাক্ষাৎকারের নয় বরং ২০০৭ সালের মে মাসে আলোচ্য ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
ভিডিওটিতে দেওয়া শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারটির উৎস জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে Immigrant channel নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে ২০০৭ সালের ১৬ মে 'Sheikh Hasina made exclusive comments in London before her arrest" শিরোনামে আপলোড করা একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। উক্ত ভিডিওটির ১ মিনিট ৩৩ সেকেন্ডে আলোচ্য ভিডিওটির মত দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। ভিডিওটিতে বলা হয়, ২০০৭ সালের পহেলা মে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে ওই বক্তব্য দেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনাকে বলতে দেখা যায়, "জনগণের কাছে আমার আহ্বান থাকবে যে কোনো অন্যায় অবিচার হলে আমি জনগণের কাছেই বিচার চাইবো।"। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
আরো রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'Tanvir Ahmed' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলেও ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই 'একজন কাউন্সিলরও যদি না চায়, পদত্যাগ করবো- শেখ হাসিনা।' শিরোনামে প্রকাশিত আরেকটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ডেস্ক্রিপশনে বলা হয়, "লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সে দেওয়া বক্তৃতা শেষে শেখ হাসিনার একান্ত সাক্ষাতকারে শেখ হাসিনা চ্যানেল এস কে বলেন, একজন কাউন্সিলরও যদি না চায় তাহলে দলীয় সভানেত্রী পদে থাকবেন না তিনি।" ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ভিডিওটি সাম্প্রতিক নয়। ২০০৭ সালে লন্ডনে থাকা অবস্থায় আওয়ামী লীগ সভনেত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিও থেকে কেটে আলোচ্য ভিডিওটি নেওয়া হয়েছে।
সুতরাং শেখ হাসিনার ২০০৭ সালে লন্ডনে থাকা অবস্থায় দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারের ভিডিওকে নতুন করে বিভ্রান্তিকর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে।