সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও প্রচার করে বলা হচ্ছে, বোরকা পরে একটি হিন্দু মেয়ে মুসলিম সেজে পূজামণ্ডপে পূজা করতে গেছে। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ১৪ অক্টোবর 'জটিল সমীকরণ' নামে একটি ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "দেখুন একটা হিন্দু মেয়ে মুসলিম সেজে বোরকা পড়ে পূজা মন্ডপে গেছে এরপর কি হয় দেখুন। এদের এই ষড়যন্ত্র সবাই বেশি বেশি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন। পরে এরা মুসলিমদের উপর দোষ চাপাবে। 💯" ভিডিওটিতে বোরকা পরে একটি মেয়ের এক পূজামণ্ডপে ঢোকার চেষ্টা করাকালে মন্দিরের পুরোহিতের বাধার সম্মূখীন হয়ে বোরকা খুলে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেখা যায়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ দেখেছে, আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। আলোচ্য ভিডিওর ঘটনাটি কোনো পুজামণ্ডপে বাস্তবে ঘটেনি। ভিডিওটি একটি স্ক্রিপ্টেড ভিডিও যা সচেতনতার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল।
ভিডিওটির সম্পর্কে জানতে ভিডিওটি থেকে কি-ফ্রেম কেটে নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে 'সানজানা গলরানি' নামে একটি ফেসবুক পেজে গত ১০ অক্টোবর করা একটি পোস্টে আলোচ্য ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা থাকতে দেখা যায়, "This Was Unexpected..! 😲😲.... Disclaimer: Thank you for watching! Please note that this page features scripted dramas, parodies, and awareness videos. These short films are created for entertainment and educational purposes only. All characters and situations depicted in the videos are fictional and intended to raise awareness, entertain, and educate. (এটি অপ্রত্যাশিত... ঘোষণা: দেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ! অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন যে এই পেজটিতে স্ক্রিপ্ট করা নাটক, প্যারোডি এবং সচেতনতামূলক ভিডিও রয়েছে। এই শর্ট ফিল্মগুলি শুধুমাত্র বিনোদন এবং শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে। ভিডিওগুলিতে চিত্রিত সমস্ত চরিত্র এবং পরিস্থিতি কাল্পনিক এবং সচেতনতা বৃদ্ধি, বিনোদন এবং শিক্ষার উদ্দেশ্যে।)" ফেসবুক পোস্টটি দেখুন--
পরবর্তীতে একাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে ওই একাউন্টটি পরিচালিত হয়। একাউন্টটি থেকে বিভিন্ন সময়ে একই ধরণের ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে এবং একাউন্টটি পরিচালনাকারী নিজেকে একজন অভিনেত্রী হিসেবে দাবি করেন।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি বিভ্রান্তিকর। বোরকা পরে একটি মেয়ের পুজামণ্ডপে ঢোকার চেষ্টা করার ঘটনাটি কোনো বাস্তব ঘটনা নয় বরং স্ক্রিপ্টেড।
সুতরাং বোরকা পরা মেয়ের পুজামণ্ডপে ঢোকার স্ক্রিপ্টেড নাটকের ভিডিওকে বাস্তব দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা বিভ্রান্তিকর।