সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক পেজ ও আইডি থেকে সম্প্রতি টাইটান সাবমার্সিবল ডুবোযান দুর্ঘটনার খবরের সাথে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে, ডুবোযানটির বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের ছবি এগুলো। একটি ছবিতে পানির নিচে একটি পুরোনো যন্ত্রাংশ পরে থাকতে দেখা যায়। এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
গত গত ২৪ জুন 'Arif Hossain' নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে তিনটি ছবি (আলোচ্য ছবিটি ডান থেকে প্রথম) পোস্ট করে লেখা হয়েছে, "২.৫ আড়াই কোটি টাকা খরচ করে জীবনের ঝুকি নিয়ে আজ ইতিহাস হয়ে গেল টাইটান। অবশেষে দীর্ঘ ৪ দিনের অনুসন্ধান শেষে টাইটানিকের কাছেই পাওয়া গেল সাবমেরিন টাইটানের ধ্বংসাবশেষ। ৫ আরোহীর মধ্যে তাদের কেউই বেচে নেই। [...]"। স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, ছবিটি টাইটান সাবমার্সিবল ডুবোযান দুর্ঘটনার নয়।
রিভার্স ইমেজ সার্চ করার পর দেখা যায়, 'Prince of Deepfakes (Parody)' নামের একটি টুইটার হ্যান্ডেলে গত ২২ জুন ছবিটি পোস্ট করে লেখা হয়েছে "BREAKING: First look - Imploded Titan titanic submarine implosion debris field."
টুইটার একাউন্টটিতে আরো একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়, যা ভিন্ন এঙ্গেলের হলেও আলোচ্য ছবির সাথে বেশ সাদৃশ্যপূর্ণ। টুইটার কর্তৃপক্ষ এই ছবির সাথে একটি ব্যাখ্যা জুড়ে দিয়েছে। যেখানে তারা উল্লেখ করেছে, 'এটি একটি শৈল্পিক (artistic impression) ছবি এবং এটি ফটোগ্রাফ নয়। টাইটান সাবমেরিনের ধ্বংসাবশেষের কোনো রিপোর্ট করা ছবি নেই।"
আবার, টুইটার একাউন্টি ভালোভাবে পর্যবেক্ষন করলেও দেখা যায় এটি মূলত একটি প্যারোডি বা হাস্যরসাত্মক একাউন্ট। টুইটার ব্যবহারকারী তার বায়োতে নিজেকে স্যাটায়ারিস্ট হিসাবে পরিচয় দিয়েছেন। টুইটার একাউন্টিতে নিয়মিতই বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ছবি পোস্ট করা হয়। বায়োতে একটি লাইন লেখা আছে, "The whole world is fake news."
অর্থাৎ ছবিটি বাস্তব নয় বরং কৃত্রিম পদ্ধতিতে তৈরি।
প্রসঙ্গত, ওশানগেট কোম্পানির পরিচালিত সাবমার্সিবল টাইটান পাঁচজন যাত্রী বহন করে আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসস্তূপের জায়গা সফর করতে রওয়ানা হবার পর দুর্ঘটনার শিকার হয়। ২২শে জুন টাইটানিক ধ্বংসাবশেষের কাছে একটি অনুসন্ধানী ডুবোযান টাইটানের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করে। ওশানগেট এক বিবৃতিতে নিশ্চিত করে যে তাদের সব যাত্রীই মারা গেছেন।
সুতরাং, সাবমার্সিবল টাইটানের ধ্বংসস্তূপের ছবি দাবি করে একটি শৈল্পিক (artistic impression) ছবিকে বাস্তব দাবি করা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে, যা বিভ্রান্তিকর।