সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডি থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে, ভিডিওটিতে উপস্থিত ব্যক্তি সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস। ভিডিওটিতে গেরুয়া পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে এক নারীর সাথে আপত্তিকর কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। এরকম কয়েকটি ফেসবুক পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে ও এখানে।
গত ২৬ নভেম্বর 'Safá ゝ' নামের একটি ফেসবুক একাউন্ট থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করে বলা হয়, "তোদের প্রভু__ইসকন নেতা চিন্ময় দাসের চরিত্র ফুলের মত পবিত্র 🤭😂"। ভিডিওটিতে গেরুয়া পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে এক নারীর সাথে আপত্তিকর কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকতে দেখা যায়। ফেসবুক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য দাবিটি সঠিক নয়। পোস্টে যুক্ত ভিডিওটিতে দেখানো ব্যক্তি চিন্ময় দাস নন বরং ভিডিওর ব্যক্তি ভারতের রাজস্থানের সিকারের বাবা বালকনাথ নামে একজন মন্দিরের পুরোহিত।
আলোচ্য ভিডিওটির ব্যাপারে জানতে কি-ওয়ার্ড সার্চ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের ওয়েবসাইটে গত ২০ অক্টোবর "Rajasthan Spiritual Leader Accused Of Using Prasad To Drug, Rape College Student; Case Filed After Video Sparks Outrage" শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওটির একটি স্থিরচিত্র খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাজস্থানের সিকার জেলার এক আধ্যাত্মিক নেতা, ক্ষেত্রপাল মন্দিরের বাবা বালকনাথের বিরুদ্ধে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বাবার তাকে মাদক সেবন ও যৌন হেনস্থা করার অভিযোগে ছাত্রীটি নগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, পুলিশ একটি মামলা দায়ের করেছে এবং বিষয়টি সক্রিয়ভাবে তদন্ত করছে। স্ক্রিনশট দেখুন--
আরো সার্চ করে ভারতীয় আরেকটি গণমাধ্যম এবিপি লাইভের ইউটিউব চ্যানেলে গত ২০ অক্টোবর "Rajasthan के Baba Balaknath ने चलती कार में स्कूली छात्रा से कुछ ऐसा किया कि वीडियो हुआ वायरल...." শিরোনামে একটি ভিডিও প্রতিবেদনে আলোচ্য ভিডিওটির ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজস্থানের ক্ষেত্রপাল মন্দিরে বাবা বালকনাথের সঙ্গে নিগৃহীত নারীর পরিচয় করিয়ে দেয় রাজেশ নামক এক ব্যক্তি। ওই মহিলা অভিযোগ করেন তাকে গাড়ি করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেন বাবা বালকনাথ এবং গাড়িতে তাকে মাদকযুক্ত প্রসাদ খাইয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন তিনি। এই ঘটনার ভিডিও করে গাড়িচালক যোগেশ। প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, "এই ঘটনার পর থেকে হেনস্থার শিকার হন তিনি। তাঁকে বার বার মন্দিরে ডেকে পাঠান বাবা বালকনাথ। যেতে না চাইলে তাঁর ধর্ষণের ভিডিয়ো ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেন। পুলিশে খবর দিলে ফল ভালো হবে না বলে শাসানোও হয়। ইউটিউব ভিডিওটি দেখুন--
এছাড়াও হিন্দুস্তান টাইমস, ইটিভি ভারাত ও ফ্রি প্রেস জার্নালের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকেও জানা যায় একই তথ্য।
অর্থাৎ আলোচ্য পোস্টের দাবিটি সঠিক নয়। ভিডিওতে দেখানো ব্যক্তি চিন্ময় দাস নন বরং ভারতের রাজস্থানের বাবা বালকনাথ নামে একজন পুরোহিতের।
সুতরাং ভারতের ভিন্ন একজন গেরুয়াধারী ব্যক্তির ভিডিওকে বাংলাদেশের হিন্দু নেতা চিন্ময় দাসের বলে দাবি করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।