সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থ্রেডসে একটি ছবি এবং কিছুক্ষেত্রে ভিডিও পোস্ট করে বলা হচ্ছে, আমেরিকার ব্রুকলিন জাদুঘরে ছাত্রছাত্রীদের ধন্যবাদ জানিয়ে আয়াতুল্লাহ খোমেনির ব্যানার। এরকম দুইটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে। দাবিটির ভিডিও সহ ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত দুইটি পোস্ট দেখুন এখানে ও এখানে।
গত ২২ জুন 'terry_d_patriot' ইউজারনেম এর থ্রেডস অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি (ভিডিওটির স্থিরচিত্র) পোস্ট করা হয়। এতে ব্যানারে সুপ্রিম লিডার এর নিচে আয়াতুল্লাহ খোমেনির ছবির পাশাপাশি লেখা থাকতে দেখা যায়, "Thanks you Americans boys and girls!"। পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
ফ্যাক্ট চেক:
বুম বাংলাদেশ যাচাই করে দেখেছে, আলোচ্য থ্রেডস পোস্টের ছবিটি ও ইনস্টাগ্রাম পোস্টের ভিডিওটি এডিটেড। ব্রুকলিন জাদুঘরের একটি ক্লিপকে সম্পাদনা করে খোমেনির ব্যনারটি যুক্ত করা হয়েছে। সেই সম্পাদিত ভিডিও ও ভিডিওর স্থিরচিত্র সামাজিক মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে।
ছবিটি নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ এর মাধ্যমে ক্ষুদে ভিডিও শেয়ারিং সামাজিক মাধ্যম 'টিকটক'-এ গত ১ জুন আলোচ্য ভিডিওটির মূল ভিডিওটি পাওয়া যায়। মূল ভিডিওটিতে বাকি সব দৃশ্যের মিল পাওয়া গেলেও খোমেনির ব্যানারটি দেখা যায়নি। টিকটক পোস্টটির স্ক্রিনশট দেখুন--
থ্রেডসে পোস্ট করা সম্পাদিত ভিডিওর স্থিরচিত্রের (বামে) সাথে টিকটকে পাওয়া মূল ভিডিওর স্থিরচিত্রের পাশাপাশি মিল দেখুন--
অর্থাৎ ব্রুকলিন জাদুঘরের একটি ভিডিওর এই দৃশ্যে আলোচ্য ব্যানারটি সম্পাদনা করে যুক্ত করা হয়েছে।
আলোচ্য ভিডিওটি দুটি আলাদা ভিডিওর সংযোজনে তৈরি করা হয়েছে। ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশে একই জাদুঘরের ব্যানারটি সহ ভিন্ন এঙ্গেলের দৃশ্য দেখা গেছে। ভিডিওটির দ্বিতীয় অংশের একটি স্থিরচিত্র ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে তুরষ্কের সংবাদ সংস্থা 'আনাদোলু' এর ইংলিশ সংস্করণের ইউটিউব চ্যানেলে দৃশ্যটির মূল ভিডিওটি (১৯ সেকেন্ড থেকে) পাওয়া যায়।
এছাড়াও সামাজিক মাধ্যম 'এক্স' (সাবেক টুইটার) -এ একজন সাংবাদিকের ভেরিফাড অ্যাকাউন্টেও একই ভিডিওটির পূর্ণ সংস্করণ পাওয়া যায়। আলোচ্য ভিডিওটির স্থিরচিত্র (বামে) ও এক্সে পাওয়া মূল ভিডিওটির স্থিরচিত্রের (ডানে) পাশাপাশি তুলনামূলক মিল দেখুন--
অর্থাৎ ব্রুকলিন জাদুঘরের ভিন্ন এঙ্গেল ভিডিওর এই দৃশ্যেও ব্যানারটি সম্পাদনার মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য এই ভিডিওতে দেখতে পাওয়া ব্রুকলিন জাদুঘরের সামনে 'Free Palestine' লেখা সম্বলিত ব্যনারটি প্রকৃতপক্ষে সেখানে টানানো হয়েছিল। স্টক ইমেজ সাইট 'গেটি ইমেজ'-এ প্রকাশিত এ সংক্রান্ত ছবি পাওয়া যায়। দেখুন--
অর্থাৎ আলোচ্য ভিডিও ও ছবিটি এডিট করে তৈরি করা হয়েছে।
সুতরাং সামাজিক মাধ্যম থ্রেডস ও ইনস্টাগ্রামে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ্ আলি খামেনির ছবি এডিট করে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে হওয়া ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলনের ভিডিওর সাথে যুক্ত করে প্রচার করা হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।